আশ্বিন মাসে দুর্গাপুজো মিটলে হাল্কা শীত শীত আমেজের মধ্যে কার্তিক মাস এসে যায়। কার্তিক মাসে কার্তিক পুজো Kartik Puja history করার রীতি রয়েছে বাংলায়। কিন্তু লক্ষ্মী-গণেশ বা সরস্বতী পুজোর মতো ঘরে ঘরে মহা ধুমধাম করে কার্তিক পুজো হতে খুব একটা দেখা যায় না। বাংলার বর্ষপঞ্জিতে আর কোনো মাসের নাম কোনো দেবতার নামে নয়। কার্তিক মাস মানে হেমন্তকাল।
ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসবের সময়েও কিন্তু দেখা যায় কার্তিকের পুজো। আর দরজার সামনে Kartik Puja history কার্তিক ফেলে বাড়িতে পুজো করানোর এবং নিমন্ত্রণ খাওয়ার রীতি বাংলায় চলে আসছে বহুদিন ধরেই। দেবী দুর্গার কনিষ্ঠ পুত্র হিসেবে কার্তিকের সঙ্গে আমরা বেশি পরিচিত হলেও তাঁর একটি পৃথক ও স্বতন্ত্র পরিচয় রয়েছে। Kartik Puja history কার্তিক পূজা এবং তার রীতি-নীতি সব কিছুর সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে কার্তিকের নানা পৌরাণিক আখ্যান এবং লোকবিশ্বাস আর এই সব আখ্যান ও জনশ্রুতির উপর ভর করেই বিখ্যাত হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের চূঁচুড়া, কাটোয়া, বাঁশবেড়িয়া প্রভৃতি এলাকার কার্তিক পুজো। পুরাণে শিব ও পার্বতীর পুত্র কার্তিক বা কুমার কার্তিকেয় হলেন যুদ্ধের দেবতা, ময়ূর তাঁর বাহন।
তাঁর ছয়টি মাথা যা কিনা ষড়রিপুর প্রতীক হিসেবেও কল্পনা করা হয়। যুদ্ধের দেবতা কার্তিক চিরকুমার অর্থাৎ তিনি অবিবাহিত। আবার কোথাও কোথাও বলা হয়েছে যে কার্তিকের পত্নী হলেন ষষ্ঠী দেবী। কালিদাসের ‘কুমারসম্ভব’ কাব্য পড়লে জানা যাবে কার্তিকের জন্মের আসল পৌরাণিক কারণ। তারকাসুরকে বধ করার উদ্দেশ্যে কার্তিকের জন্ম হয়। দৈবী বরে তিনি কেবল শিব এবং দুর্গার পুত্রের দ্বারাই বধ্য হবেন।ফলে নিজেকে অজেয় মনে করে দেবলোকে প্রবল সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে শুরু করেন তারকাসুর। দেবতারা মিলিত হয়ে মহামায়াকে নির্দেশ দেন হিমালয়ের কন্যা পার্বতী রূপে জন্মগ্রহণ করতে। পার্বতী আবার শিবের মতো পুত্রলাভের আশায় শিবের তপস্যায় রত হলেন আর এই সময় তিনি পূর্ণ উপবাসে ছিলেন, একটি পাতাও তিনি মুখে দেননি।
তাই পার্বতীর অপর নাম হয় অপর্ণা। শিব তপস্যায় সন্তুষ্ট হলেন আর ইতিমধ্যে দেবতাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী শিবের ধ্যানভঙ্গ হওয়া মাত্র মদনদেবের ছোঁড়া পঞ্চবাণে শিবের মধ্যে কাম জাগ্রত হয় এবং পার্বতীর সঙ্গে তিনি মিলিত হন। শিব ও শক্তিরূপিনী পার্বতীর মিলনের ফলে এক ভীষণ তেজোদীপ্ত অগ্নিপিণ্ডের উৎপত্তি ঘটে যার তেজ অগ্নিদেব, গঙ্গা কেউই সহ্য করে না পারায় তাকে এক বনের মধ্যে ছয়জন কৃত্তিকার গর্ভে ভাগ করে দেওয়া হয়।এর ফলেই ছয়টি মাথাবিশিষ্ট কার্তিকের জন্ম হয়। দেবসেনাপতি নিযুক্ত হয়ে ছয়দিন ধরে যুদ্ধ করে তিনি তারকাসুরকে বধ করেন। যদিও এই কাহিনীরও বিশেষ বিশেষ রূপভেদ রয়েছে। কৃত্তিকার গর্ভে জন্ম হয় বলে তাঁর নাম হয় কার্তিক। স্কন্দ পুরাণে কার্তিকের বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যায়। মহাভারতের কাহিনীতেও কার্তিককে ‘স্কন্দ’ নামেই অভিহিত করা হয়েছে।
যে ছয়জন কৃত্তিকার কাছে তিনি লালিত-পালিত হয়েছিলেন তারা ছিলেন ঋষিপত্নী এবং কৃত্তিকাদের সঙ্গে পরপুরুষের সম্পর্ক আছে সন্দেহ করে ঋষিরা তাঁদের তাড়িয়ে দেন। মায়ের সম্মান অর্জনের জন্য কার্তিক সেই কৃত্তিকাদের অনুর্ধ্ব ষোল বছর বয়সী ছেলে-মেয়েদের নানাবিধ অনিষ্ট করতে বলেন এবং অপদেবতাদের গর্ভের ভ্রূণ নষ্ট করার আদেশ দেন। এমতাবস্থায় সন্তানাদি না হওয়ায় শোকে জর্জরিত হয়ে পড়েন মর্ত্যবাসী। এই সময়েই কার্তিকের পুজো করে পুত্রসন্তান প্রাপ্তির কথা প্রচারিত হয়ে যায়।সন্তান কামনায় এবং সন্তানের মঙ্গল প্রার্থনায় কার্তিক সেই থেকেই ঘরে ঘরে পূজ্য হয়ে ওঠেন। তাই হিন্দুদের কাছে কার্তিক হল উর্বরতার প্রতীক। কার্তিকের স্ত্রী ষষ্ঠীদেবী জন্ম ও জন্মসূত্রের দেবী এবং অন্যদিকে কার্তিকের যোদ্ধা মনোভাবের কারণে বলিষ্ঠ ও সুন্দর সন্তান পাবার আশায় কার্তিক পূজিত হন। সন্তানহীন দম্পতিরা তাই কার্তিক মাসে এই পুজো করে থাকেন।
কার্তিক পূজার সঙ্গে জড়িয়ে আছে কার্তিক ব্রত সহ আরো নানাবিধ পল্লী বাংলার নানা আচার-সংস্কার। কার্তিক সংক্রান্তির দিনে কার্তিকের মূর্তিকে সন্তানবতী মায়েরা পূজা করেন। চার প্রহরে চার বার পুজো করা এবং ব্রতকথা শোনার পরে ভোরবেলায় কার্তিকের বিসর্জন ঘটে। কার্তিক প্রতিমা কোনোভাবেই জলে বিসর্জনের নিয়ম নেই বলেই সকলের বিশ্বাস। অনেকে আবার পুজোর শেষে একটি কার্তিক মূর্তি কোলে নিয়ে ঘরে খিল এঁটে দেয়।এই কারণেই কার্তিক পূজার আগের রাতে পাড়ার কিছু ছেলে-ছোকরা মিলে নববিবাহিত দম্পতির বাড়ির দরজার সামনে কার্তিক রেখে যায় এখনও। কার্তিক ঠাকুর দরজার সামনে থাকলে তাঁকে ঘরে তুলতেই হবে এবং পুজো করতে হবে। তাই কার্তিক ফেলা নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় এখনও মফস্বলের দিকে মজা-খুনসুটি চলে। তবে এ সবের প্রধান উদ্দেশ্য সন্তান প্রাপ্তির প্রার্থনা। বলা হয় কার্তিক মাস পড়লে ঘরের সবথেকে উঁচু জায়গায় আকাশপ্রদীপ জ্বালানো শুভ ইঙ্গিতবাহী। কার্তিক সংক্রান্তি পর্যন্তই এই আকাশপ্রদীপ জ্বালানো হয়।
শুধু বাংলাতেই নয়, দক্ষিণ ভারতেও কার্তিক একজন জনপ্রিয় দেবতা। তামিলদের কাছে ‘মুরুগণ’ এবং অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্ণাটকে তিনি ‘সুব্রাহ্মণ্যম্’ নামে পূজিত হন। তামিলনাড়ুতে মুরুগণের ছয়টি বিখ্যাত মন্দির রয়েছে। ওড়িশাতে আবার কোজাগরী পূর্ণিমায় কার্তিক পূজা হয়ে থাকে যাকে ওড়িশায় বলা হয় কুমার পূর্ণিমা। কুমারী মেয়েরা এই দিন কার্তিকের মতো স্বামীর কামনায় পূজা করে থাকেন। পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে চূঁচুড়া, কাটোয়া আর বাঁশবেড়িয়ার কার্তিক পূজা খুবই বিখ্যাত।কাটোয়ার বিখ্যাত ন্যাংটা কার্তিকের পূজায় খেলনা, বেলুন, মোয়া, কদমা, লাড্ডু এগুলি দিয়ে শিশু ভোলানোর মতো কার্তিককে ভুলিয়ে রাখা হয়। মূলত কাটোয়ার নিষিদ্ধপল্লীতে বারবনিতারা নিজেদের সন্তানকামনায় এই কার্তিকের পুজো করতেন বলে জানা যায়। সার্বজনীন কার্তিক পূজায় এখানে বিখ্যাত রীতি হল কার্তিক পূজার লড়াই।
কাশীগঞ্জ পাড়ায় বাংরা কার্তিক, তাঁতিপাড়ার সাত ভাই কার্তিক, সুবোধ স্মৃতি মোড়ে জামাই কার্তিক ইত্যাদি নানা নামে কাটোয়া জুড়ে কার্তিক পূজা চলে। কাটোয়ার কার্তিক ঠাকুরের শোভাযাত্রার প্রধান অংশ হল ‘থাকা’ অর্থাৎ কতগুলি পুতুলের একসঙ্গে একই কাঠামোতে প্রদর্শন। এই ‘থাকা’তেই ফুটে ওঠে নানাবিধ পুরাণের গল্প। বাঁশবেড়িয়ার ক্ষেত্রে এই পুজো শুরু হয়েছিল জমিদার নন্দীর আমল থেকে।তখন একে বলা হতো ‘ধুমো কার্তিক’। এখানে কার্তিক ঠাকুরের রাজার বেশ লক্ষ্য করা যায় বলে একে অনেকে রাজা কার্তিক বলে থাকেন। মনে করা হয় এই পুজো শুরু হয়েছিল ১৬০০ সালে। তাছাড়া কাঁসারিরা এখানে যোদ্ধা কার্তিকের পুজো করে থাকেন। কার্তিকের এই পুজোগুলি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে আজও।
কার্তিকের জন্ম কিভাবে হয়েছিল? Kartikeya – স্কন্দ পুরাণ অনুসারে, শিবের কাছ থেকে ছয়টি ঐশ্বরিক স্ফুলিঙ্গ উদ্ভূত হয়েছিল, ছয়টি পৃথক শিশুর জন্ম হয়েছিল। কৃত্তিকা নামে পরিচিত হ্যান্ডমেইডেনদের দ্বারা এই ছেলেদের বড় করা হয়েছিল। পরে, পার্বতী তাদের একত্রিত করে ছয় মাথাওয়ালা কার্তিকেয় তৈরি করেন । কার্তিকেয় মানে সংস্কৃতে “কৃত্তিকাদের”।
কার্তিক পুজো করলে কি হয়? প্রচলিত লোকবিশ্বাস, নিষ্ঠা ভরে কার্তিক পুজো করলে অপুত্রকের সন্তানলাভ হয়। সন্তানের মঙ্গল হয়।
কার্তিক পূজা কেন করা হয়? তামিলনাড়ুতে, সঙ্গম যুগ থেকেই কার্তিকেয় সমাজের সকল শ্রেণীর কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। মুরুগান তামিলদের দার্শনিক-যোদ্ধা দেবতা। কার্তিকেয়কে শিব এবং পার্বতীর পুত্র হিসাবে বিবেচনা করা হয়, যিনি অসুরদের হত্যা করার জন্য এবং দেবতা এবং অন্যান্য জীবের শাশ্বত রক্ষক হতে তৈরি করেছিলেন।
কার্তিক মাস কেন শুভ? কার্তিক মাস বছরের সবচেয়ে শুভ এবং পবিত্র মাসগুলির মধ্যে একটি, যা ভগবান বিষ্ণু এবং ভগবান কৃষ্ণের উপাসনার জন্য নিবেদিত । এই মাসটি দামোদর মাস নামে পরিচিত। এটি আধ্যাত্মিক জ্ঞান ও শুদ্ধির মাস যেহেতু আমরা উত্তরায়ণ থেকে দক্ষিণায়নের দিকে যাচ্ছি।
কার্তিকের স্ত্রীর নাম কি? Devasena – সংস্কৃত শাস্ত্রে সাধারণত শুধুমাত্র দেবসেনাকেই কার্তিকেয়ের সঙ্গী হিসাবে বিবেচনা করা হয়, যখন তামিলনাড়ুতে, তার দুটি স্ত্রী আছে, দেবায়নাই (দেবসেনা) এবং ভালি। দেবসেনাকে দেবতাদের রাজা ইন্দ্র এবং তার স্ত্রী শচীর কন্যা বা অন্তত ইন্দ্রের দত্তক কন্যা হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
কার্তিক পূজা কেন পালন করা হয়? কার্তিক পূর্ণিমার তাৎপর্য ‘ত্রিপুরী পূর্ণিমা’ বা ‘ত্রিপুরারি পূর্ণিমা’ নামেও পরিচিত, এই উত্সবটি রাক্ষস, ত্রিপুরাসারের উপর ভগবান শিবের বিজয়ের উদযাপন । এই উৎসবও ভগবান বিষ্ণুর সম্মানে পালিত হয়। এই দিনে, তিনি মৎস্য রূপে অবতারণা করেছিলেন, যা তাঁর প্রথম অবতার।
কার্তিক ঠাকুরের দশটি নাম কি কি? পুরাণ অনুসারে, কৃত্তিকা নক্ষত্রে তাঁর জন্ম হয়েছিল বলে মনে করা হয়। ছয় কৃত্তিকার দ্বারা তিনি পুত্ররূপে পূজিত হন বলে তাঁকে কার্তিকেয় বা কার্তিক বলা হয়। কার্তিকের রয়েছে বিভিন্ন নাম। যেমন গুহ, পাবকি, মহাসেন, কুমার, গাঙ্গেয়, বিশাখ, নৈগমেয়, কুক্কুটধ্বজ।
কার্তিক কেন বিয়ে করেননি? Kartikeya – উত্তর ও পূর্ব ভারতীয় ঐতিহ্যে, কার্তিকেয়কে সাধারণত ব্রহ্মচারী ব্যাচেলর হিসাবে গণ্য করা হয় । সংস্কৃত সাহিত্যে, কার্তিকেয় দেবসেনাকে বিয়ে করেন (আদি। ‘দেবসেনা’; তাঁর স্বামী ছিলেন ‘দেবসেনাপতি’। ‘দেবদের সেনাবাহিনীর সেনাপতি’)।
কার্তিকেয় না গণেশ কে শক্তিশালী? ভগবান কার্তিকেয় এবং ভগবান গণেশ উভয়ই সমান শক্তিশালী । ভগবান কার্তিকেয় ভগবান শিবের শক্তি থেকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন যখন ভগবান গণেশ দেবী পার্বতীর শক্তি থেকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
কার্তিক কি শিবের পুত্র? শিব, ধ্বংসের দেবতা, এবং শিবের স্ত্রী পার্বতী ছিলেন কার্তিকেয়ের পিতামাতা , যিনি তাকে ছয়টি মস্তক বিশিষ্ট পাঁচটি পৃথক সন্তানকে এক দেবতায় তৈরি করেছিলেন। তিনি কিছু ঐতিহ্য অনুসারে দেবাসনা এবং ভল্লীকে বিয়ে করেছিলেন এবং গরুড় পাখি তাকে তার বাহন হিসেবে একটি ময়ূর দিয়েছিলেন।
কার্তিকের জন্মস্থান কোথায়? তবে তার জন্মস্থান অনেকেরই জানা নেই। রামায়ণ অনুসারে, তিনি হিমালয় পর্বতের ঢালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং সেই পর্বতটি ক্রৌঞ্চ পর্বত নামে পরিচিত। এটা সত্যিই একটি খুব সুন্দর জায়গা.
কার্তিক অর্থ কি? কার্তিক হল ভগবান মুরুগানের সাথে যুক্ত – ভগবান শিবের পুত্র। কার্তিক নামের অর্থ সাহস ও সুখী ব্যক্তি।
বলি ও দেবসেনা কে ছিলেন? Devasena – সংস্কৃত ধর্মগ্রন্থ স্কন্দ পুরাণের তামিল পাণ্ডুলিপিতে দেবসেনা এবং বল্লীকে যথাক্রমে বিষ্ণু, অমৃতবল্লী এবং সুন্দরাবল্লীর কন্যাদের অবতার হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এইভাবে, মুরুগানকে বিষ্ণুর জামাই, তাদের স্বামী হিসাবে গণ্য করা হয়।
কার্তিকেয় দেহ কোথায় রেখেছিলেন? কার্তিকেয় তার শরীর ত্যাগ করেন তাই, তিনি সমস্ত হিংসা ত্যাগ করেছিলেন এবং শেষবারের মতো, কর্ণাটকে যেটিকে আজ ” ঘটি সুব্রমণ্য ” বলা হয় সেখানে তার তলোয়ার ধুয়ে ফেললেন। তিনি সেখানে কিছুক্ষণ ধ্যানে বসেছিলেন এবং তারপরে সেই পাহাড়ে উঠলেন যার নাম আজ “কুমার পর্বত”। কর্ণাটকে সুব্রামণ্য কুমার নামে পরিচিত।