
Heart Attack
Heart Attack হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায় নুন নুন ছাড়া খাবারের স্বাদ কল্পনা করা খুবই কঠিন। কিন্তু আপনি কি জানেন যে অতিরিক্ত নুন খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর? নুনে সোডিয়াম পাওয়া যায়, যা রক্তচাপ বাড়িয়ে Heart Attack হৃদরোগের সমস্যা তৈরি করে। তাই সমস্যা এড়াতে Heart Attack হৃদরোগীদের সাধারণ মানুষের তুলনায় সীমিত পরিমাণে নুন খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তাহলে Heart Attack হৃদরোগীদের দিনে ঠিক কতটা নুন খাওয়া উচিত? ডাক্তারদের দাবি, হৃদহৃদরোগীদের প্রতিদিন মাত্র ১০০০ মিলিগ্রাম অর্থাৎ প্রায় ১.৫ গ্রাম সোডিয়াম খাওয়া উচিত। সহজ ভাষায় এটি বোঝার জন্য, হৃদরোগীদের প্রতিদিন এক চা চামচেরও কম নুন খাওয়া উচিত। একই সময়ে, একজন সুস্থ ব্যক্তির জন্য প্রতিদিন ২৩০০ মিলিগ্রাম অর্থাৎ প্রায় ২.৩ গ্রাম নুন খাওয়া যথেষ্ট বলে মনে করা হয়। হু-এর নির্দেশিকায় বলা হচ্ছে দিনপ্রতি শরীরে যাওয়া সোডিয়ামের পরিমাণ ২ গ্রামেরও নীচে নামিয়ে আনতে। সাধারণ নুনে ৫ গ্রামেই থাকে ২ গ্রাম সোডিয়াম। অর্থাৎ, হু-এর নির্দেশিকা মেনে চললে দিনে ৫ গ্রামেরও কম নুন খেতে হবে।
হু ওই নির্দেশিকায় বলেছে সাধারণ নুন খাওয়ার পরিমাণই কমিয়ে দিতে। কারণ শরীরে যাওয়া সোডিয়ামের পরিমাণ কমানোর সেরা উপায় সেটাই। নুন নিয়ে হু-এর সাম্প্রতিকতম নির্দেশিকায় বলা হচ্ছে সাধারণ নুনে থাকা সোডিয়ামের বদলে আংশিক ভাবে পটাশিয়াম দেওয়া নুন খাওয়া যেতে পারে। যদিও হু বলেছে তাদের ওই তৃতীয় নির্দেশিকাটি কিডনির সমস্যা থাকা শিশু, মহিলা বা যে কোনও ব্যক্তি যিনি কিডনির সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের উপর প্রযোজ্য নয়।
হু জানাচ্ছে, তাদের বিশেষজ্ঞরা গোটা পৃথিবীতে হওয়া নুন সংক্রান্ত ২৬টি গবেষণা এবং সমীক্ষার তথ্য খতিয়ে দেখেছেন। তার মধ্যে একটি গবেষণা ভারতেরও। ওই সমস্ত গবেষণায় যোগ দিয়েছিলেন অন্তত ৩৫ হাজার মানুষ। তাঁদের উপর লক্ষ্য রাখা হয়েছে ২ মাস থেকে শুরু করে ৫ বছর পর্যন্ত। ওই সমস্ত গবেষণায় কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য করেছেন তাঁরা। ১। দেখা গিয়েছে, সাধারণ নুন খাওয়ার অভ্যাস পাল্টে রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ২। মারণ নয়, এমন স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে এনেছে ১০ শতাংশ। হৃদ্রোগে মৃত্যুর সংখ্যাও কমিয়েছে ২৩ শতাংশ। ৩। সাধারণ নুনের বদলে পটাশিয়াম-যুক্ত নুন খেয়ে রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রাও বেড়েছে। রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা ঠিক থাকা জরুরি। কারণ, প্রথমত, সোডিয়ামের ক্ষতিকারক প্রভাব কমাতে পারে পটাশিয়াম। দ্বিতীয়ত, পটাশিয়াম কোষে পুষ্টি সঞ্চার করে বর্জ্য বার করে আনতে সাহায্য করে। তৃতীয়ত, পটাশিয়াম হার্টের পেশির সঙ্গে যুক্ত স্নায়ুকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
সোডিয়ামের বদলে অন্য কোনও বিকল্প নুন খাওয়ার কথা জোর দিয়ে বলছে না হু। কারণ গবেষণায় কোনও কোনও ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে সোডিয়ামের বদলে পটাশিয়াম দেওয়া নুন খেলেও শরীরে সোডিয়ামের পরিমাণ কমেনি। শুধু রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। ফলে কোনও কোনও ক্ষেত্রে শরীরে সোডিয়াম না কমায় হার্টের রোগের ঝুঁকি কমেছে, সেটাও জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। অনেকগুলি গবেষণায় সাধারণ নুনের বদলে পটাশিয়াম দেওয়া নুন খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলেও কিছু কিছু গবেষণায় নুনে পটাশিয়ামের পাশাপাশি ম্যাগনেশিয়াম এবং ক্যালশিয়াম রাখার কথাও বলেছে।
ভারতের জন্য হু-এর নির্দেশিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, দেশে হৃদ্রোগ, হাইপারটেনশন, হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক হতে শুরু করেছে কমবয়সিদের মধ্যেও। ভারতের চিকিৎসক সংগঠন আইসিএমআর-ইনডায়াব-এর সমীক্ষা বলছে, ভারতের মোট জনসংখ্যার ৩৫.৫ শতাংশ হাইপারটেনশনের সমস্যায় ভোগেন। ২০১৬ সালের গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজ়িজ়ের একটি গবেষণা বলছে, ভারতে মোট মৃত্যুর ২৮.১ শতাংশ হয় হৃদ্রোগের কারণে। অনেকেই সাধারণ নুনের স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসাবে সৈন্ধব নুন খান। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সৈন্ধব নুনে সোডিয়ামের মাত্রা থাকে সাধারণ নুনের প্রায় সমপরিমাণ। হু-এর নির্দেশিকা অনুযায়ী, শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি, যার জন্য পটাশিয়াম দেওয়া নুন স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে। তবে শুধু পটাশিয়াম দেওয়া নুন খেলেই যে সোডিয়াম কমবে তা-ও নয়। বাইরে খাওয়া বা প্যাকেটজাত খাবারেও নুন থাকে। তা থেকেও শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা বাড়তে পারে। অন্যান্য শারীরিক কারণেও শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা না কমতে পারে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হতে ক্লিক করুন Aaj Bangla হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।