মুহম্মদ শহীদুল্লাহ (Muhammad Shahidullah) একজন ভারতীয় বাঙালি সুপণ্ডিত যিনি বহুভাষাবিদ তথা শিক্ষক ও দার্শনিক হিসেবে ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছেন। তিনি প্রায় চব্বিশটি ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। মানুষ হিসেবেও তিনি ছিলেন অত্যন্ত উদার। রক্ষণশীল পরিবারের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও তাঁর সর্বধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা সাধারণ মানুষকে ভীষণভাবে আকৃষ্ট করত। ২০০৪ সালে বিবিসি বাংলা আয়োজিত ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি’র সমীক্ষায় তিনি ১৬তম স্থান অধিকার করেন। ১৮৮৫ সালের ১০ জুলাই অবিভক্ত ভারতের ২৪ পরগণা জেলার পেয়ারা গ্রামে মুহম্মদ শহীদুল্লাহর জন্ম হয়। তাঁর বাবা মফিজউদ্দিন আহমেদ পীর গোরাচাঁদের দরবার শরিফের খাদেম ছিলেন। তাঁর মা হুরুন্নেসা ছিলেন একজন সাধারণ গৃহবধূ।
Muhammad Shahidullah শহীদুল্লাহর পূর্বনাম ছিল মোহাম্মদ ইব্রাহিম। তাঁর মা পরে তাঁর নামকরণ করেন ‘শহীদুল্লাহ’। বিবাহিত জীবনে শহীদুল্লাহর ৯টি সন্তান যাদের মধ্যে মুহম্মদ তকিয়ুল্লা ও মুর্তাজা বশির ছিলেন সর্বাধিক পরিচিত। পৈতৃক পেশা গ্রহণ না করে শৈশব থেকেই তিনি ভাষা ও জ্ঞানচর্চায় ব্রতী হন।শহীদুল্লাহর প্রাথমিক পড়াশোনা শুরু হয় গ্রামের এক মক্তবে। সেখানকার পাঠ সাঙ্গ করে তিনি ভর্তি হন হাওড়া জিলা স্কুলে। সেখানে তিনি বিভিন্ন ভাষা শিক্ষার প্রতি আকৃষ্ট হন। শিখতে শুরু করেন আরবি, ফার্সি, উর্দু, হিন্দি, ওড়িয়া এবং গ্রিকও। ১৯০৪ সালে এই স্কুল থেকে তিনি এন্ট্রান্স পাশ করেন। এরপর ১৯০৬ সালে কলকাতার প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে তিনি এফ.এ পাশ করেন। হুগলি কলেজে সংস্কৃত ও ইংরেজি বিষয়ে অনার্স নিয়ে ভর্তি হয়েও গেছিলেন। বহুভাষাবিদ হরিনাথ দে তাঁকে পরামর্শ দেন সংস্কৃত নিয়ে এগোনোর।
বলা যায় তাঁর পরামর্শেই Muhammad Shahidullah শহীদুল্লাহ ইংরেজি ছেড়ে সংস্কৃত নিয়ে পড়াশোনা করতে থাকেন। প্রবল শারীরিক অসুস্থতার জন্য পরীক্ষা দিতে না পারায় সেই বছরটি নষ্ট হয় তাঁর। এর এক বছর পর বহিরাগত পরীক্ষার্থী হিসেবে পরীক্ষা দিলেন বটে কিন্তু এক নম্বরের জন্য পাশ করতে পারলেন না। দ্বিতীয় বার পরীক্ষা দেওয়ার জন্য কলেজে ভর্তির আবেদন করলে তা নাকচ হয়ে যায়। তাঁর ভর্তির আবেদন নাকচের পেছনে অন্যতম কারণ মুসলমান ছাত্র হয়েও সংস্কৃত নিয়ে পড়বার দুসাহস।শেষ পর্যন্ত আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের চেষ্টায় তিনি ভর্তি হলেন কলকাতা সিটি কলেজে। ১৯১০ সালে তিনি সংস্কৃতে অনার্স নিয়ে সিটি কলেজ থেকে বেদের পত্রে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম মুসলমান ছাত্র হিসেবে সংস্কৃতে স্নাতক হন। এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এম.এ পড়ার জন্য। কিন্তু মুসলমান হওয়ার জন্য অধ্যাপক সত্যব্রত সামশ্রমী তাঁকে বেদ পাঠদান করতে অসম্মত হন। আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও সত্যব্রত সামশ্রমী রাজী হলেন না।
ইংরেজি পত্রিকা ‘কমরেড’-এ ‘দ্য শহীদুল্লাহ অ্যাফেয়ার’ নামে একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয় সামশ্রমীর এই মনোভাবের কড়া সমালোচনা করে। শেষ পর্যন্ত শহীদুল্লাহ সত্যব্রত সামশ্রমীর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন এবং হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, হয় শহীদুল্লাহকে সংস্কৃত পড়তে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক, অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর জন্য পৃথক একটি বিষয় চালু করে যেন তাঁকে পড়ানোর ব্যবস্থা করে। প্রথম বিকল্পটি ফলপ্রসূ না হওয়ায় দ্বিতীয় নির্দেশ অনুসারে আশুতোষ মুখোপাধ্যায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ভাষাতত্ত্ব’ (ফিলোলজি) নামে নতুন একটি বিভাগ চালু করেন। Muhammad Shahidullah শহীদুল্লাহ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক ভাষাতত্ত্ব বিভাগে এরপর ভর্তি হন এবং ১৯১২ সালে এই বিভাগের প্রথম ছাত্র হিসেবে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।১৯১৪ সালে তিনি লাভ করেন বি.এল ডিগ্রিও। স্কুল ফাইনাল পাশ করার পরই শহীদুল্লাহ সুযোগ পেয়েছিলেন যশোর জেলা স্কুলে শিক্ষকতা করার। এম.এ পাশ করার পর ১৯১৪ সালে কিছুদিন তিনি সীতাকুণ্ড হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯১৫ থেকে তিনি বসিরহাটে ওকালতি করতে শুরু করেন।
এখানে তিনি পৌরসভার ‘চেয়ারম্যান’ নির্বাচিত হন। ১৯১৯ সালে শহীদুল্লাহ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক দীনেশচন্দ্র সেনের সহকারী গবেষক হিসেবে যোগ দেন। এখানে যোগ দেওয়ার দু বছরের মধ্যেই ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সংস্কৃত ও বাংলা বিভাগে লেকচারার পদে যোগ দিতে আহ্বান জানায়। একইসাথে ওই শিক্ষায়তনে আইন বিভাগেও সাময়িক পদে শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি। এরপর ১৯২৬ সালে শহীদুল্লাহ উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি দেন সুদূর ইউরোপে।প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি অধ্যয়ন করেন বৈদিক ভাষা, বৌদ্ধ সংস্কৃত, তুলনামূলক ভাষাতত্ত্ব, তিব্বতি ও প্রাচীন পারসিক ভাষা এবং জার্মানির ফ্রাইবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি প্রাচীন খোতনি, প্রাচীন ভারতীয় বৈদিক সংস্কৃত ও প্রাকৃত ভাষা শেখেন। ১৯২৮ সালে প্যারিসের সরবন বিশ্ববিদ্যালয়ে চর্যাপদের কথ্যভাষার উপর গবেষণা করে লাভ করেন পি.এইচ.ডি ডিগ্রি। মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ই ছিলেন ভারতীয় মুসলিমদের মধ্যে প্রথম ডক্টরেট উপাধিপ্রাপ্ত ব্যক্তি। প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বনিতত্ত্বের উপরে তাঁর অসামান্য গবেষণার জন্য তাঁকে ডিপ্লোমা প্রদান করে।
ভারতে ফিরে এসে ১৯৩৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে অধ্যাপক ও রিডার হিসেবে যোগ দেন শহীদুল্লাহ। এই পদ থেকে অবসর গ্রহণের পর ১৯৪৪ সালে বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজে অধ্যক্ষ পদের দায়িত্ব পান তিনি। এরপর ক্রমান্বয়ে ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ফরাসি ভাষার সাময়িক অধ্যাপক ও ১৯৫৫ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পালি ও সংস্কৃত বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কাজ করার পর এখান থেকে তিনি অবসর গ্রহণ করেন ১৯৫৮ সালে।সমগ্র জীবনে শহীদুল্লাহ প্রায় চব্বিশটি ভাষা শিক্ষা করেছিলেন যার মধ্যে আঠারোটি ভাষায় তাঁর অসাধারণ পাণ্ডিত্য ছিল অনর্গল বক্তৃতা দিতে পারতেন এগুলিতে। এই ভাষাগুলির মধ্যে ছিল বাংলা, উর্দু, আরবি, ফার্সি, ইংরেজি, ওড়িয়া, হিন্দি, পাঞ্জাবী, গুজরাতি, সংস্কৃত ইত্যাদি আরো অনেক ভাষা। তাঁর মতে বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়েছিল সপ্তম শতাব্দীতে গৌড়ীয় বা মাগধী প্রাকৃত থেকে। বাংলা ভাষা সংস্কৃতের কন্যা নয়, তবে নিকট আত্মীয়। উর্দু ভাষার অভিধান রচনা প্রকল্পেও তিনি সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন।
পরে পূর্ব পাকিস্তানি ভাষার আদর্শ অভিধান প্রকল্পের সম্পাদক হিসেবে বাংলা একাডেমিতে যোগ দেন তিনি। ১৯৬১ সালে বাংলা একাডেমির ইসলামি বিশ্বকোষ রচনা প্রকল্পের অস্থায়ী সম্পাদক পদে নিযুক্ত হন তিনি। ১৯৬৩ সালে বাংলা একাডেমি কর্তৃক গঠিত বাংলা একাডেমির পঞ্জিকার তারিখ বিন্যাস কমিটির সভাপতিও নিযুক্ত হন। তাঁর নেতৃত্বে বাংলা পঞ্জিকা একটি আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত রূপ পায়। তিনিই প্রথম ভারতীয় যিনি আঞ্চলিক ভাষায় অভিধান রচনার কাজ শুরু করেছিলেন।শহীদুল্লাহ বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সমিতির সম্পাদক ছিলেন। সারা জীবনে অজস্র সাহিত্য সম্পর্কিত কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন তিনি। সারা জীবনে তিনি চল্লিশটিরও বেশি গ্রন্থ ও একচল্লিশটি পাঠ্যপুস্তক রচনা করেছিলেন। তাঁর রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘ভাষা ও সাহিত্য’, ‘বাংলা ভাষার ইতিবৃত্ত’, ‘দীওয়ানে হাফিজ’, ‘নবী করিম মুহাম্মদ’, ‘ইসলাম প্রসঙ্গ’, ‘বিদ্যাপতি শতক’, ‘বাংলা ভাষার ব্যাকরণ’, ‘ব্যাকরণ পরিচয়’ ইত্যাদি। রবীন্দ্রনাথের সাথেও তাঁর পরিচয় ছিল। বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার সময় ম্যানেজিং কমিটিতে রবীন্দ্রনাথ শহীদুল্লাহকে অন্তর্ভুক্ত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শহীদুল্লাহ অবশ্য রাজী হননি। শহীদুল্লাহ ছিলেন সত্যিই একজন খাঁটি বাঙালি।
জাতিসত্তা সম্পর্কে Muhammad Shahidullah মুহম্মদ শহীদুল্লাহর স্মরণীয় একটি উক্তি ছিল, “আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি।” ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন শহীদুল্লাহ। পূর্ব পাকিস্তানে তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি রাষ্ট্রভাষা হিসেব উর্দুকে গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছিলেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয় শহীদুল্লাহর একটি লেখার মধ্য দিয়ে। ‘কমরেড’ পত্রিকায় এইসময় তাঁর একটি লেখা প্রকাশিত হয় যার নাম ছিল ‘দ্য ল্যাঙ্গুয়েজ প্রবলেম অফ পাকিস্তান’।এই নিবন্ধের সার সংক্ষেপ ছিল এরকম, “স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা যদি বাংলার বদলে অন্যকিছু হয়, তবে সে স্বাধীনতা পরাধীনতারই নামান্তর।” তিনি আরো বলেছিলেন, “দেশে একটি রাষ্ট্রভাষা থাকলে সে সম্মান বাংলার, দুটি রাষ্ট্রভাষা থাকলে বাংলার সঙ্গে উর্দুর কথা ভেবে দেখা যেতে পারে।” এই সমস্ত কথাগুলি তখনকার শিক্ষিত নাগরিকদের উপর বিপুল প্রভাব বিস্তার করে। এই কথার উপর ভিত্তি করেই শুরু হয়ে যায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার দাবিতে ঘোরতর আন্দোলন, যা ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছে ‘ভাষা আন্দোলন’ নামে।
ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ে Muhammad Shahidullah শহীদুল্লাহর বহু মননশীল ও জ্ঞানগর্ভ প্রবন্ধ নানা পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এবং এ সংক্রান্ত বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাও তিনি সম্পাদনা করেছেন। ছাত্রজীবনেই পড়াশোনার পাশাপাশি ‘আল এসলাম’ পত্রিকার সহকারী সম্পাদক ও ‘বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা’র যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁরই সম্পাদনা ও প্রকাশনায় বাংলা ভাষায় প্রথম ছোটদের পত্রিকা ‘আঙুর’ আত্মপ্রকাশ করে। এছাড়াও তিনি ইংরেজি মাসিক পত্রিকা ‘দি পীস’, বাংলা মাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘বঙ্গভূমি’ এবং পাক্ষিক পত্রিকা ‘তকবীর’ সম্পাদনা করেছেন। তিনি যুবসমাজকে জাগরিত করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন জায়গায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ সভা ও সম্মেলনে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘দ্বিতীয় বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সম্মেলন’, ঢাকায় ‘মুসলিম সাহিত্য সমাজ সম্মেলন’, কলকাতায় ‘নিখিল বঙ্গ মুসলিম যুবক সম্মেলন’, হায়দ্রাবাদে ‘নিখিল ভারত প্রাচ্যবিদ্যা সম্মেলন’ এবং ‘পূর্ব পাকিস্তান সাহিত্য সম্মেলন’। মাদ্রাজে ‘ইন্টারন্যাশনাল সেমিনার অন ট্রাডিশনাল কালচার ইন সাউথ-ইস্ট এশিয়া’ অনুষ্ঠানে তিনি ইউনেস্কোর প্রতিনিধিত্ব করেন এবং তার চেয়ারম্যান মনোনীত হন। ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় Muhammad Shahidullah মুহম্মদ শহীদুল্লাহ কে ‘এমেরিটাস অধ্যাপক’ পদে ভূষিত করে।
এছাড়া ঢাকার সংস্কৃত পরিষদ তাঁকে ‘বিদ্যাবাচষ্পতি’ উপাধি প্রদান করে। পাকিস্তানি শাসনে তাঁকে ‘প্রাইড অফ পারফরমেন্স’ ও মরণোত্তর ‘হিলাল-ই-ইমতিয়াজ’ সম্মান দেওয়া হয়েছিল। ভারতবর্ষের ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস’ তাঁকে ‘সম্মানিত সদস্য’ বা ‘ফেলো’ পদের জন্য নির্বাচিত করা সত্ত্বেও তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের অসম্মতির জন্য তিনি এই পদ গ্রহণ করতে পারেননি।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে মরণোত্তর ‘ডি.লিট’ উপাধি প্রদান করে। ১৯৮০ সালে তিনি মরণোত্তর বাংলাদেশের স্বাধীনতা পদক পেয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, সুদূর ইউরোপের ফ্রান্স বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ‘নাইট অফ দ্য অর্ডারস অফ আর্টস এন্ড লেটার্স’ খেতাব দিয়ে সম্মানিত করেছিল। তাঁর বিপুল ভাবে সমৃদ্ধ জ্ঞানভাণ্ডারের জন্য তিনি জনমানসে পরিচিত ছিলেন ‘মুভিং এনসাইক্লোপিডিয়া’ বা ‘চলন্ত শব্দ-কল্প-দ্রুম’ নামে। ১৯৬৯ সালের ১৩ জুলাই ৮৪ বছর বয়সে অধুনা বাংলাদেশের ঢাকা শহরে মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর তাঁর কীর্ত্তির প্রতি সম্মান জ্ঞাপন করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঢাকা হল’-এর নাম বদলে রাখেন ‘শহীদুল্লাহ হল’।