বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ ইজ়রায়েল , মাথাপিছু আয় ৪২ লক্ষ! ৭৬ বছর আগে জন্ম নেওয়া এই ছোট্ট রাষ্ট্রটিকে বিশ্বের অন্যতম বিতর্কিত রাষ্ট্র বলে মনে করা হয়। israel ইজ়রায়েল নামটি শুনলেই যুদ্ধবিগ্রহ, ধর্মীয় কিংবা রাজনৈতিক সংঘাতের কথা চলে আসে। ইজ়রায়েল এমন একটি দেশ, যার গতিবিধি প্রতিনিয়ত আতশকাচের মধ্যে ফেলে মাপে একাধিক রাষ্ট্র। আয়তনের দিক থেকে যতই ছোট হোক না কেন, গত কয়েক দশকে রাষ্ট্র হিসাবে নিজের পরিধি অনেকটাই বাড়িয়েছে ইজ়রায়েল। প্রাকৃতিক সম্পদের অভাব, লাগাতার সংঘর্ষের আবহ সত্ত্বেও এই ক্ষুদ্র ইহুদি রাষ্ট্র এক দিকে যেমন শক্তিশালী হয়েছে, অন্য দিকে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পশ্চিম এশিয়ার অন্য দেশগুলিকে পিছনে ফেলে ধনী দেশের তালিকায় নাম তুলে ফেলেছে ইজ়রায়েল। ক্ষুদ্র এই দেশটি মাথাপিছু আয়ের নিরিখে সৌদি আরবকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে। বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে রকেটগতিতে এগিয়ে যাওয়া দেশটির এই সাফল্য কী ভাবে এল, তা খুঁজতে গেলে অনেকগুলি বিষয় উঠে আসে। গত কয়েক মাস ধরে পশ্চিম এশিয়া জুড়ে ঘনিয়েছে যুদ্ধের মেঘ। হামলা-পাল্টা হামলায় উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। ইরানের মদতপুষ্ট লেবাননের সশস্ত্র বাহিনী হিজ়বুল্লার সঙ্গে ইজ়রায়েলের সংঘাতের মধ্যেই ইহুদি রাষ্ট্রে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান।
যুদ্ধকে পাশ কাটিয়ে নিজেদের সাফল্যকে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে ইজ়রায়েল। এর অন্যতম কারণ হল দেশটির অর্থনৈতিক অগ্রগতি। ২০২৩ সালের একটি রিপোর্ট বলছে, ইজ়রায়েলের জিডিপি ৪২ লক্ষ ২৮ হাজার কোটি টাকা ছুঁয়েছে। যে কোনও দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির মূলে থাকে সেই দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপি। ১৯৪৮ সালে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে আত্মপ্রকাশ করার পর থেকে আশির দশক পর্যন্ত দেশটির অর্থনৈতিক অগ্রগতি তেমন উচ্চতায় পৌঁছতে পারেনি। ১৯৮৫ সালের অর্থনৈতিক সংস্কারের পর তা চড়চড় করে উপরের দিকে উঠতে থাকে। বর্তমানে ইজ়রায়েলের নাগরিকদের মাথাপিছু আয় ৪২ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। এই সূচক যত বেশি হবে তার প্রতিফলন দেখা যাবে নাগরিক জীবনযাত্রায়।
মাথাপিছু আয়ের নিরিখে ফ্রান্স, জার্মানি, ইংল্যান্ডকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে এই রাষ্ট্র। পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে সিঙ্গাপুর ও কাতার বাদে ইজ়রায়েলের সামনে আর কেউ নেই। ১৯৮৪ সালে ইজ়রায়েলের অর্থনৈতিক অগ্রগতি প্রায় থমকে যেতে বসেছিল। প্রায় ৪৫০ শতাংশ মু্দ্রাস্ফীতি তৈরি হয়েছিল সেই সময়। নাগরিকদের আয় কমতে শুরু করায় জমানো পুঁজি নিঃশেষ হতে থাকে। বিনিয়োগেও মন্দা শুরু হয় ইজ়রায়েল জুড়ে। সেই সময় ইজ়রায়েলিদের মাথাপিছু আয় ছিল প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা। ৪০ বছরের মধ্যে সেই আয় অনেকটাই বাড়িয়েছে ইজ়রায়েল সরকার। অর্থনীতির উপর চেপে থাকা ঋণের বোঝা কমাতে বেশ কয়েকটি সাহসী পদক্ষেপ করে তৎকালীন সরকার।
এর মধ্যে প্রথম পদক্ষেপটি হল ভর্তুকি প্রত্যাহার। খাদ্য, পরিবহণ ও প্রতিরক্ষা খাতে সমস্ত রকম সরকারি সাহায্য প্রায় বন্ধ করে দেওয়া হয়। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করা হয়েছিল সেই সময়। সেটি হল অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রার নিরিখে ইজ়রায়েলি মুদ্রার (ইজ়রায়েলি শেকেল) মূল্যমান কমিয়ে দেওয়া। পণ্য রফতানির পরিমাণ বাড়তে থাকায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের হাতে প্রভূত ক্ষমতাও প্রদান করে সরকার। ইজ়রায়েলের নাগরিকদের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির প্রধান কারণ হল এর রফতানি। হিরে, ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট, সার, চিকিৎসার যন্ত্রপাতি রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশটি। ইজ়রায়েলি পণ্যের চাহিদা বিশ্ব জুড়ে থাকায় দেশটির রফতানির পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে।
তবে এ সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে এ দেশে প্রযুক্তির বাড়বাড়ন্ত। পশ্চিম এশিয়ার দেশটির অর্থনীতির চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির স্টার্ট আপ সংস্থাগুলি। গত কয়েক দশক ধরে পৃথিবীর অন্যতম প্রযুক্তিধর দেশ হিসাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে ইহুদি দেশটি। ইজ়রায়েলে চার হাজারেরও বেশি প্রযুক্তি সংস্থা রয়েছে। এই সংস্থাগুলির মধ্যে রয়েছে বিশ্বের প্রথম সারির তাবড় সংস্থাগুলি। বিশ্বের প্রধান ৫০০টি সংস্থার মধ্যে ৮০টিরই গবেষণাকেন্দ্র এবং নব্য প্রযুক্তি বিষয়ক কেন্দ্র রয়েছে তেল আভিভে। দেশটিতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে এমন স্টার্ট আপের সংখ্যা লাখের উপরে। প্রযুক্তি বিষয়ে একমাত্র চিন টক্কর দেওয়ার ক্ষমতা রাখে ইজ়রায়েলের সঙ্গে।
ইজ়রায়েল প্রতিষ্ঠার সময়ে সেখানে জল এবং উর্বর ভূমির সঙ্কট ছিল। অত্যাধুনিক সেচ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মরুভূমিতে নানা ধরনের শস্য ফলিয়ে পথ দেখিয়েছে দেশটি। ইজ়রায়েলের সাফল্যের মূলে রয়েছে এ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাও। ১৯৪৮ সালে ইজ়রায়েল প্রতিষ্ঠা হওয়ার ৩০ বছর আগেই ইহুদিরা জেরুজ়ালেমে প্রতিষ্ঠা করেন ‘দ্য হিব্রু ইউনিভার্সিটি অফ জেরুজ়ালেম’। বর্তমানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের দিক থেকে ইজ়রায়েল রয়েছে একেবারে প্রথম সারিতে। আমেরিকার সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক এবং বিনিয়োগও ইজ়রায়েলকে সামরিক ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে মজুবত করেছে বলে মনে করেন ইজ়রায়েল বিষয়ক গবেষকেরা।
ইসরায়েল এর ধর্ম কি? ইসরায়েল ইসরায়েল מְדִינַת יִשְׂרָאֵל (হিব্রু) دولة إسرائيل (আরবি) ধর্ম (২০১৯) ৭৪.২% ইহুদি ধর্ম ১৭.৮% ইসলাম ধর্ম ২.০% খ্রিস্টধর্ম ১.৬% দ্রুজ ৪.৪% অন্যান্য।
ইহুদিদের আদি নিবাস কোথায়? যদিও এদের আদি নিবাস ছিল ফিলিস্তিন-লেবানন-জর্ডান-সিরিয়া অঞ্চল, তবে এক সময় তারা জার্মানিসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। তারা ছিল এতোটাই ধূর্ত যে ইউরোপ তাদের দেশে তাদেরকে স্থান না দিয়ে তাদের স্থান করে দেয় মধ্যপ্রাচ্যে। আর ইহুদিদের চরিত্র তো প্রকাশ পেয়েছে ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ নাটিকার শাইলক চরিত্রের মাধ্যমে।
ইসরাইল দেশের আয়তন কত? এলাকা (পশ্চিম তীর এবং গাজা স্ট্রিপ বাদে): 8,522 বর্গ মাইল (22,072 বর্গ কিমি)।
ইসরায়েলের হিন্দু জনসংখ্যা কত? হিন্দুধর্ম অনুসারি ইসরায়েল দেশের মোট হিন্দু ৬,৪২৭
ইহুদি ধর্মের প্রবর্তক কে ছিলেন? ইহুদি ধর্ম ইহুদিধর্ম যিহূদীধর্ম ভাষা শাস্ত্রীয় ইব্রীয় সদর দপ্তর যিরূশালেম (সিয়োন) প্রবর্তক অব্রাহাম উৎপত্তি খ্রীষ্টপূর্ব ২০শ–১৮শ শতাব্দী যিহূদা মেসোপটেমিয়া
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্ম কোনটি? সেই কারণে ‘রিলিজিয়ন’ বা ধর্ম অপেক্ষা ‘রিলিজিয়াস ট্র্যাডিশন’ বা ধর্মসংস্কার হিসেবেই একে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সংজ্ঞায়িত করা হয়। এই বৈশিষ্ট্য হিন্দুধর্মকে বিশ্বের প্রাচীনতম ধর্মবিশ্বাসের পাশাপাশি বিশ্বের সর্বাধিক বৈচিত্র্যপূর্ণ ধর্মের শিরোপাও দান করেছে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হতে ক্লিক করুন Aaj Bangla হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।