আবহাওয়ার সঙ্গে শরীরও শুরু করে খামখেয়ালিপনা। এই রোদ তো এই আবার ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। জলহাওয়ার কোনও ঠিক ঠিকানা নেই। আর এই সময়েই বিশেষ করে শরীর বিগড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। আবহাওয়া বদলের সময় খুশখুশে, শুকনো কাশির সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। শুকনো কাশি সহজে সারতেও চায় না। গলা চুলকোয় এবং বাড়াবাড়ি হলে গলা জ্বালাও করে। ঢোঁক গিলতে কষ্ট, হাজারো সমস্যা।Cough and Cold
আবার হয়তো দুদিন কাশি হয়ে সেরে গেল, কদিন পর আবার সেই একই সমস্যা ফিরে এল। দীর্ঘদিন এমন সমস্যা হবে তা ফেলে রাখা একেবারেই উচিত নয়। তবে ডাক্তারের কাছে ছোটার আগে একবার ঘরোয়া টোটকাগুলো ব্যবহার করে দেখতে পারেন। যদি ঠান্ডা লাগার সমস্যা বা কাশির সমস্যা চলতেই থাকে তাহলে অবশ্যই সঠিক ওষুধ খেতে হবে।
Cough and Cold শরীরের অন্য কোনও সমস্যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে কাশির সমস্যা কি না জেনে নিতে হবে চিকিৎসকের থেকে। তাঁর পরামর্শ মেনে খেতে হবে ওষুধ। ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি কফির ওপর ভরসা করতে পারেন। ক্যাফেইন সমেত বা ডি-ক্যাফেইনেটেড কফি খেতে পারেন যা ঠান্ডা লেগে থাকলেও শরীরকে সতেজ করে। এছাড়া ফ্লেভার সমেত কফি যেমন মধু-কফি গলায় আরাম দেয় তৎক্ষণাৎ। ক্লান্তি, নিস্তেজ ভাব কাটিয়ে উঠতেও সাহায্য় করে কফি।
মধু: মধুতে প্রাকৃতিক অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং ক্ষত নিরাময়ের বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা গলা ব্যথা প্রশমিত করতে সাহায্য করতে পারে। এর পুরু, সান্দ্র গঠন গলায় স্ফীত টিস্যুতে একটি প্রতিরক্ষামূলক আবরণও তৈরি করে। শুষ্ক কাশি উপশমের জন্য, 1-2 চা চামচ কাঁচা, অপাস্তুরাইজড মধু প্রয়োজনমতো গলায় আবরণ এবং জ্বালা প্রশমিত করুন। শুধু শিশু বোটুলিজমের ঝুঁকির কারণে 12 মাসের কম বয়সী শিশুদের মধু দেওয়া এড়িয়ে চলুন। Cough and Cold
আদা: আদার মধ্যে জিঞ্জেরল নামক যৌগ রয়েছে যা শ্বাসনালীর পেশী শিথিল করতে পরিচিত। এটি আপনাকে কাশির সময় আরও সহজে শ্লেষ্মা নিঃসরণ করতে দেয়। গরম জলে তাজা গ্রেট করা আদা শিকড় ভিজিয়ে একটি মশলাদার আদা চা তৈরি করুন বা এর কাশি-দমন সুবিধার জন্য অন্যান্য ভেষজ চায়ের মিশ্রণে আদা যোগ করুন। আদার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যগুলি গলা ফোলা এবং অস্বস্তি কমাতেও সাহায্য করতে পারে। Cough and Cold
টাইম: থাইমে থাইমল নামে একটি সক্রিয় যৌগ রয়েছে, যা গলার পেশী শিথিল করতে সাহায্য করে। এটি একটি antispasmodic হিসাবে কাজ করে, কাশি ফিট প্রতিরোধ করে। শুকনো কাশি উপশমের জন্য থাইম ব্যবহার করতে, 3-4 চা চামচ শুকনো থাইম পাতা বা গুঁড়ো ফুটন্ত পানিতে 5-10 মিনিটের জন্য ভিজিয়ে থাইম চা তৈরি করুন। থাইম চা মাঝে মাঝে কাশির জন্য ব্যবহার করলে মৃদু স্বস্তি দেয়। থাইম অতিরিক্ত ব্যবহার না করার বিষয়ে সতর্ক থাকুন, কারণ বেশি পরিমাণে পেট খারাপ হতে পারে।
ঠান্ডা লাগলে, বা কাশির সমস্যা হলে জল খেতে সমস্যা হয়। গলায় ব্যথার জন্য ঢোঁক গিলতে গেলে ব্যথা হয়। তবুও এই সময় বেশি করে জল খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। এতে গলায় থাকা মিউকাসগুলো ভেঙে পাতলা হয় এবং কাশতে গেলে যন্ত্রণা কম হবে।
অনেকেই ভাবেন ঠান্ডা লাগলে স্নান এড়িয়ে যাওয়া ভালো। একেবারেই না। ঠান্ডা বা সাধারণ তাপমাত্রার জলে না হলেও স্নান করা মাস্ট। প্রয়োজনে উষ্ণ গরম জলে স্নান সারুন। শরীরের জমা সর্দি বেরোতে সাহায্য করে নিয়মিত স্নান।
একাধিক কারণে ঠান্ডা লাগতে পারে। আবহাওয়া বদলের পাশাপাশি আপনি ফ্লুয়ের শিকার হতে পারেন। অ্যাসিডিটি হয়ে গেলেও গলা জ্বালা করে, কাশির সমস্যা হতে পারে। সর্দি, জ্বর ইত্যাদি অন্য় কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না তা বুঝে সেভাবেই সুশ্রুষা প্রয়োজন। ফলে প্রয়োজন মতো চিকিৎসকের পরামর্শ খুবই জরুরি
কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।