হিন্দুধর্মে Tulsi Farming Business তুলসী চাষের আধ্যাত্মিক ও আয়ুর্বেদিক গুরুত্ব প্রাচীনকাল থেকেই রয়েছে। এই গাছটি আপনাকে কোটিপতিও করে তুলতে পারে। Tulsi Farming Business তুলসী গাছের ব্যবসা করে লাখ লাখ টাকা আয় করতে পারেন। এতে আপনাকে খুব বেশি বিনিয়োগ করতে হবে না। ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়ানোর জন্য আজকাল মানুষের মধ্যে অনেক সচেতনতা এসেছে, সেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য আয়ুর্বেদিক ও প্রাকৃতিক ওষুধও তৈরি হচ্ছে , যার মধ্যে তুলসীও প্রচুর ব্যবহার করা হয়। যে কারণে তুলসীর চাহিদা অনেক বেড়েছে। শুধু তাই নয়, আজকাল মানুষ ঘরেও প্রচুর তুলসী ব্যবহার করছে।
বর্তমানে অনেকেই নিজের ব্যবসা শুরু করার কথা ভাবছেন। তবে কোন ব্যবসা শুরু করবেন তা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। কারণ কোন ব্যবসা হিট হবে, তা আগে থেকে আন্দাজ করা মোটেই সহজসাধ্য নয়। এখানে এমন একটি ব্যবসার বিষয়ে বলা হচ্ছে, যা থেকে আপনি মোটা টাকা উপার্জন করতে পারেন। তুলসী চাষ করে প্রচুর অর্থ লাভ করা যায়। এরাজ্যে তো বটেই, গোটা দেশেও Tulsi Farming Business তুলসী গাছের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। কারণ এটি দেশের প্রতিটি বাড়িতে পূজো, যজ্ঞ, ওষুধ তৈরি ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হয়। তুলসী চাষে তেমন কোনও খরচের প্রয়োজন নেই।
তুলসী গাছের নানা ঔষধি ব্যবহার রয়েছে।
১.প্রাচীনকাল থেকে সর্দি, কাশি, ঠাণ্ডা লাগা ইত্যাদি নানা সমস্যায় তুলসী ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ঠাণ্ডা ও সর্দিজনিত যেকোনো সমস্যায় তুলসী রস ও মধু একত্রে খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এ গাছের রস কৃমি ও বায়ুনাশক।[২]ঔষধ হিসাবে এই গাছের ব্যবহার্য অংশ হলো এর রস, পাতা এবং বীজ। আয়ুর্বেদ ও ভেষজ চিকিৎসায় তুলসীর ব্যাপক ব্যবহার বয়েছে, বিশেষত ভারতীয় উপমহাদেশে।
২.ঠাণ্ডা বা গরমে ঘোরা বা অতিরিক্ত ঠাণ্ডা বা গরমে চোখ ওঠে। রোগটি সঃক্রামক। একজনের হলে বাড়ি শুদ্ধ সকলেরই হয়।ঐ সময় তুলসী পাতার রস কাজলের মত চোখে দিলে বা মধু মিশিয়ে তা চোখে দিলে চোখ ওঠা, চোখে দিয়ে জল পড়া বন্ধ হয়।
৩.কুষ্ঠরোগ হলে তুলসী পাতার রস সব সময় সেবন করা উচিত। যদি আঙুল ক্ষয়ে যায়,হাড়ে আক্রমণ করে, তাহলেও তুলসীর রস খাওয়া উচিত।
৪.দাতে যদি খুব যন্ত্রণা হয় তবে তুলসী পাতার সঙ্গে গোল মরিচ মিশিয়ে বেটে তার তৈরী করে তা দাতের যন্ত্রণার জায়গায় চেপে বসিয়ে দিলে দাতের যন্ত্রণার কমবে।
৫.শরীরে রক্ত হ্রাস পেলে জন্ডিস রোগীর হয়। এই রোগটি হলে ৫ গ্রাম তুলসী পাতা,৫ গ্রাম জল দিয়ে বেটে খেলে জন্ডিস রোগে যে হলুদ বর্ণ হয় তা কেটে যায়। রোগীর রোগ সেরে যায়।
তুলসী চাষ করতে (Basil Farming), সবচেয়ে ভাল সময় হল জুলাই মাস। তুলসীর সাধারণ চারা ৪৫ x ৪৫ সেমি ব্যবধানে রোপণ করতে হবে তবে RRLOC 12 এবং RRLOC 14 প্রজাতির জন্য ৫০x ৫০ সেমি দূরত্ব রাখতে হবে। এসব গাছ লাগানোর পরপরই সামান্য সেচের প্রয়োজন হয়। তুলসী চাষের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফসল তোলার ১০ দিন আগে সেচ দেওয়া বন্ধ করতে হবে।
তুলসী গাছের পাতা বড় হলে এই গাছ কাটা হয়। যখন এই গাছগুলিতে ফুল ফোটে, তখন তাদের মধ্যে তেলের পরিমাণ কমে যায়, তাই যখন এই গাছগুলিতে ফুল ফোটা শুরু হয়, তখন তা কাটা উচিত। এই গাছগুলিকে ১৫ থেকে ২০ মিটার উচ্চতা থেকে কাটা ভাল, যাতে গাছে শীঘ্রই নতুন শাখা আসতে পারে। এই গাছগুলি বিক্রি করতে, আপনি বাজারের এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে বা সরাসরি বাজারে গিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে গাছগুলি বিক্রি করতে পারেন। এছাড়াও, আপনি ওষুধ কোম্পানি বা এই জাতীয় সংস্থার কাছে চুক্তিতে আপনার উদ্ভিদ বিক্রি করতে পারেন। এই সংস্থাগুলিতে তুলসীর উচ্চ চাহিদা রয়েছে, তাই এটি বিক্রি করতে আপনার কোনও সমস্যা হবে না।
তুলসী চাষ করতে খুব বেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে না। কিংবা এর জন্য প্রচুর জমির প্রয়োজন হয় না। আপনি মাত্র ১৫ হাজার টাকা দিয়ে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন এবং আপনি যদি চান তবে কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের মাধ্যমেও আপনার ব্যবসা শুরু করতে পারেন।তুলসী বপনের পর আর ফসল তোলার জন্য বেশি অপেক্ষা করতে হয় না। এতে মাত্র ৩ মাসে চারা তৈরি হয় এবং তুলসীর ফসল বিক্রি হবে প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকায়। আয়ুর্বেদিক পণ্য তৈরির অনেক কোম্পানিতে তুলসী গাছের প্রয়োজন হয়, তাই তারা চুক্তিতে চাষ করে। ডাবর, বৈদ্যনাথ, পতঞ্জলির মতো অনেক কোম্পানি তুলসীর কন্ট্রাক্ট ফার্মিং করছে। অর্থাৎ মাত্র ৩ মাসে ৩ লাখ টাকার বাম্পার লাভ পাবেন।