Shri Hanseshwari Temple ব্যাণ্ডেল-কাটোয়া রেলপথে একটি স্টেশন বাঁশবেড়িয়া | ব্যাণ্ডেল থেকে বাঁশবেড়িয়া খুব বেশি হলে ৪ কিলোমিটার | বাঁশবেড়িয়ায় রয়েছে দুটো বিখ্যাত মন্দির | হংসেশ্বরী এবং অনন্ত বাসুদেব মন্দির | তবে আজ আমরা জেনে নেবো মা হংসেশ্বরীর মন্দির সম্মন্ধে | দেশ-বিদেশের পর্যটক ও গবেষকদের কাছে হংসেশ্বরী মন্দিরের গুরুত্ব অপরিসীম | কিন্তু নিয়মের গেরোয় জৌলুস হারাচ্ছে এই প্রাচীন মন্দির | অতীতের বংশবাটি আজকের বাঁশবেড়িয়া। Shri Hanseshwari Temple হংসেশ্বরী মন্দিরের জন্য খ্যাতি বাঁশবেড়িয়ার।
তন্ত্রমতে তৈরি এই মন্দিরের ৫টি তলা মানুষের দেহের ইড়া, পিঙ্গলা, বজ্রাক্ষ, সুষুম্না ও চিত্রিণী – এই পাঁচটি নাড়ির ইঙ্গিত বহন করছে। ২১ মিটার উঁচু এই মন্দিরের সহস্র পাপড়ির পাথুরে ১৩টি চূড়া – রূপ তার না-ফোটা পদ্ম। পাথরের শিবের নাড়ি থেকে বেরিয়ে আসা সরু ডাঁটার পদ্মে আসীনা দেবী এখানে দক্ষিণাকালীর বীজ হংসেশ্বরী – নিম কাঠে তৈরি নীলরঙা চতুর্ভুজা। মন্দিরের নীচে থেকে উপরে ১৪টি শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠিত। বেলা ১১টা থেকে ৩টে পর্যন্ত মন্দিরের দরজা বন্ধ থাকে।
গৌরব হংসেশ্বরী মন্দিরে বহুদিন রঙের পোঁচ পড়েনি | ফ্যাকাশে চূড়া | হংসেশ্বরী প্রাঙ্গণে আরও প্রাচীন অনন্তবাসুদেব মন্দির দুর্লভ টেরাকোটায় সমৃদ্ধ | সেখানেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাব স্পষ্ট | হংসেশ্বরী কালীমন্দির পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার বাঁশবেড়িয়া নামক স্থানে অবস্থিত একটি বিখ্যাত কালী মন্দির | রাজা নৃসিংহদেব ১৭৯৯ খ্রিষ্টাব্দে হংসেশ্বরী কালীমন্দিরের নির্মাণ শুরু করেন এবং তার মৃত্যুর পর ১৮১৪ খ্রিষ্টাব্দে তার বিধবা পত্নী রাণী শঙ্করী মন্দির নির্মাণ সম্পন্ন করেন |
এই মন্দিরের চারপাশে রয়েছে পরিখা। যাকে চলতি কথায় বলা হয় গড়। সেখানে ঢোকার মুখে সুবিশাল নহবতখানা | নহবতখানা থেকে কয়েক পা এগোলেই হংসেশ্বরী মায়ের মন্দির | তেরোটি রত্ন ও মিনার প্রতিটি প্রস্ফুটিত পদ্মের ন্যায় নির্মিত মন্দিরের গর্ভগৃহের উচ্চতা ৭০ ফুট | মায়ের গর্বগৃহে হংসেশ্বরীর পঞ্চমুণ্ডির আসন | গোলাকার বেদীর ওপর পাথরে নির্মিত শায়িত শিব মূর্তির নাভি থেকে উদ্গত প্রস্ফুটিত পদ্মের ওপর দেবী হংসেশ্বরীর মূর্তি নির্মিত | সহস্রদল পদ্মের উপর ত্রিকোণ বেদী | মহাদেবের হৃদয় থেকে দ্বাদশ পদ্মের উপর মায়ের অধিষ্ঠান। মায়ের বর্ণ নীল, মাথায় ঘোমটা | সারাবছর মায়ের শান্ত রূপ থাকে | তবে কার্তিক মাসের কালীপুজোয় একরাতের জন্য মায়ের রূপ হয় এলোকেশী |
এই মন্দিরের পাশেই টেরাকোটা নির্মিত অনন্ত বাসুদেব মন্দির অবস্থিত | দুটি মন্দিরই ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ দ্বারা সংরক্ষিত | অনন্তবাসুদেব মন্দির তৈরি হয়েছিল ১৬৭৯ সালে | পোড়ামাটির কাজে সজ্জিত এই মন্দিরের আদল অনেকটা বিষ্ণুপুরের মন্দিরের মতো | অনন্তবাসুদেব মন্দিরে প্রাচীন কষ্টিপাথরের মূর্তি চুরি হয়ে যায় অনেক আগে | মাতা হংসেশ্বরী দেবীর মন্দিরে নিত্য পূজাপাঠের ব্যবস্থা আছে। ভক্তজন প্রতিদিন মাতাকে ভোগ নিবেদন করতে পারেন। দ্বিপ্রহরে মন্দিরের গর্ভগৃহ বন্ধ থাকে ,সেই কারণে তখন মাতৃ বিগ্রহ দেখা যায় না — যদিও মূল মন্দিরে প্রবেশের কোন বাধা নাই। বেলা আড়াই ঘটিকায় পুনরায় গর্ভগৃহ খুলে দেওয়া হয়। তখন মাতৃ প্রতিমা দর্শন করা যায় এবং মায়ের কাছে পূজা নিবেদনও করা যায়। ভক্তজন মায়ের ভোগ অন্ন গ্রহণ করতে চাইলে সকাল দশটার মধ্যে মন্দিরের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
মন্দিরের ফলকটিতে লেখা রয়েছে-“শাকাব্দে রস বহ্ণি মৈত্র গণিতে শ্রীমন্দিরং মন্দিরং।মোক্ষদ্বার চতুর্দ্দশেশ্বর সমং হংসেশ্বরী রাজিতং।।ভূপালেন নৃসিংহদেব কৃতিনারব্ধং তদাজ্ঞানুগা।তৎপত্নী গুরুপাদপদ্মনিরতা শ্রীশঙ্করী নির্ম্মমে।। শকাব্দ ১৭৩৬।
অর্থাৎ, চতুর্দ্দশ মোক্ষদ্বার রূপী (চতুর্দশ) শিবের সহিত হংসেশ্বরী কর্ত্তৃক বিরাজিত গৃহ এই শ্রীমন্দির যাহা কৃতী নৃসিংহদেব ভূপাল কর্ত্তৃক আরব্ধ হয় তাহা ১৭৩৬ শকাব্দে তাঁহার আজ্ঞানুগা পত্নী গুরুপাদপদ্মনিরতা শ্রীশঙ্করী নির্ম্মান করিয়াছেন।হাওড়া থেকে কাটোয়া লোকালে চেপে বাঁশবেড়িয়া স্টেশনে নামুন, স্টেশন থেকে অটো/ টোটো তে পৌঁছে যান হংসেশ্বরী মন্দির।ব্যান্ডেল স্টেশন থেকেও হংসেশ্বরী মন্দির যাবার অটো অথবা মিনি-বাস (ব্যান্ডেল – কুন্তিঘাট/ ত্রিবেণী) পাবেন।
সুতরাং কাটোয়া লোকাল না পেলে হাওড়া মেইন লাইনের যে কোন ট্রেন ধরে ব্যান্ডেল পৌঁছালেও চলবে। অর্থাৎ, চতুর্দ্দশ মোক্ষদ্বার রূপী (চতুর্দশ) শিবের সহিত হংসেশ্বরী কর্ত্তৃক বিরাজিত গৃহ এই শ্রীমন্দির যাহা কৃতী নৃসিংহদেব ভূপাল কর্ত্তৃক আরব্ধ হয় তাহা ১৭৩৬ শকাব্দে তাঁহার আজ্ঞানুগা পত্নী গুরুপাদপদ্মনিরতা শ্রীশঙ্করী নির্ম্মান করিয়াছেন।হাওড়া থেকে কাটোয়া লোকালে চেপে বাঁশবেড়িয়া স্টেশনে নামুন, স্টেশন থেকে অটো/ টোটো তে পৌঁছে যান হংসেশ্বরী মন্দির।ব্যান্ডেল স্টেশন থেকেও হংসেশ্বরী মন্দির যাবার অটো অথবা মিনি-বাস (ব্যান্ডেল – কুন্তিঘাট/ ত্রিবেণী) পাবেন। সুতরাং কাটোয়া লোকাল না পেলে হাওড়া মেইন লাইনের যে কোন ট্রেন ধরে ব্যান্ডেল পৌঁছালেও চলবে।