মুসলিম ওয়াকফ বিল বিরোধিতায় ফের নয়া কর্মসূচি তৃণমূলের। আগামী শনিবার, ৩০ নভেম্বর দলের মুসলিম সংখ্যালঘু সেলকে বড় সমাবেশ করার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওইদিন রানি রাসমণি রোডে এই সভা হবে। তৃণমূলের মুসলিম সংখ্যালঘু সেলের চেয়ারম্যান তথা ইটাহারের বিধায়ক মোশারাফ হোসেন এই সভা করবেন। মুসলিম ওয়াকফ বিল নিয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট করবেন লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্যসচেতক কল্যাণ বন্দ্যাপাধ্যায়, থাকবেন মেয়র ফিরহাদ হাকিমও।
মুসলিম ওয়াকফ বিল নিয়ে ইতিমধ্যে কেন্দ্রের পদক্ষেপ নিয়ে বিরোধিতার কথা জানিয়েছে তৃণমূল। এনিয়ে পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ” মুসলিম সম্প্রদায়ের সম্পত্তি, সেটা নিয়ে আলোচনা না করে কেন্দ্রীয় সরকার অন্যায় করছে। আজ কালীঘাটের বৈঠকে চূড়ান্ত হবে, বিধানসভায় কোন কোন বিধায়ক মুসলিম ওয়াকফ বিল নিয়ে প্রস্তাবের উপর বক্তব্য রাখবেন।” কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাবিত মুসলিম ওয়াকফ আইন নিয়ে উত্তপ্ত হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার আসন্ন শীতকালীন অধিবেশন।
মুসলিম ওয়াকফ সংশোধনী নিয়ে যে বিলটি কেন্দ্রীয় সরকার সংসদে পেশ করেছিল, তা আইনে পরিণত করানোর আগে সেটি নিয়ে বিতর্ক বেধেছে। তাই বিলটিকে আপাতত যৌথ সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। সেই কমিটিতে বিলটির বিরোধিতা করেছে তৃণমূল। পাশাপাশিই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ২৫ নভেম্বর থেকে শুরু হতে চলা বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে রাজ্য সরকার ওয়াকফ সংক্রান্ত একটি বিল পেশ করবে এবং পাশ করাবে। প্রসঙ্গত, মুসলিম ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল ২০২৪ নিয়ে তৃণমূল স্পষ্ট বিরোধিতার অবস্থান নিয়েছে। তাদের মতে, ওই বিল সংবিধানের মৌলিক নীতির পরিপন্থী, গণতান্ত্রিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী। ওই বিল সংখ্যালঘুদের অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং ‘বিভাজনের রাজনীতির অংশ’ বলে মনে করছে।
তৃণমূল সংসদীয় দলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভায় ওই বিলটিকে ‘বিভেদকামী এবং অসাংবিধানিক’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। যৌথ কমিটিতে কেন্দ্রীয় সরকারে সঙ্গে লড়াই শুরু করেছেন আইনজীবী-সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক নাদিমুল হক। কল্যাণ কমিটির বৈঠকে সরকার পক্ষের সাংসদ এবং কমিটির চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। তৃণমূলের বক্তব্য, ওই বিলের মাধ্যমে মুসলিম ওয়াকফ বোর্ডের উপর কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে, যা রাজ্যের স্বায়ত্তশাসনের ‘পরিপন্থী’। বিলের বিরোধিতায় আরও সমর্থন আদায়ের জন্য তৃণমূল দলের এক সাংসদকে অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গে সমন্বয় করার দায়িত্ব দিয়েছে।
মুসলিম ওয়াকফ বোর্ড কি? ওয়াকফ বোর্ডগুলো চিরস্থায়ী উত্তরাধিকারী এবং সম্পত্তি অর্জন ও ধারণ করার ক্ষমতা সহ সাধারণ সীলমোহরযুক্ত সংস্থা হবে৷ ওয়াকফ সম্পত্তি বা তার আয় মোট সংখ্যার পনের শতাংশের বেশি শিয়া ওয়াকফ হলে হলে আইনটি পৃথক শিয়া ওয়াকফ বোর্ড সম্পর্কে গঠন করতে উল্লেখ করেছে।
মুসলিম ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৪ এ কি আছে? বিলটি অমুসলিম সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিল এবং ওয়াকফ বোর্ডের গঠন পরিবর্তন করে। সার্ভে কমিশনারকে কালেক্টর দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে, তাকে ওয়াকফ সম্পত্তির জরিপ পরিচালনা করার ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।
ভারতে কয়টি মুসলিম ওয়াকফ বোর্ড আছে? ভারতে 30টি ওয়াকফ বোর্ড রয়েছে, বেশিরভাগই তাদের প্রধান কার্যালয় ভারতের রাজ্য রাজধানীতে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হতে ক্লিক করুন Aaj Bangla হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।