বসিরহাটর basirhat পূর্ব দিকে রয়েছে বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা জেলা। এই জেলার ঘোজাডাঙা স্থলবন্দরের দ্বারা বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের পণ্য আমদানি রপ্তানি হয়। জেলাটির দক্ষিণ প্রন্ত থেকে শুরু হয়ে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিশ্বের বিখ্যাত ও বৃহত্তম ম্যনগ্রভ বন সুন্দরবন অবস্থিত। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী একটি প্রাচীন শহর basirhat বসিরহাট। স্বাধীনতার আগে এটি একটি বাণিজ্যকেন্দ্র ছিল।
বসুদের হাট(ডক ঘাটের ইজারাদার বসু পরিবার), বসুর হাট, বশির (লবণ) হাট, অন্যমতে বাঁশের হাট থেকে বসিরহাট কথার উৎপত্তি। কারো মতে বসি (নিচু জমি) থেকে বসিরহাট। কেউ বলেন বসতি থেকে বসি,তার থেকে বসিরহাট। বিভিন্ন ইতিহাসবিদের কথায় বসিরহাটের নামের নানা উৎস পাওয়া যায়। মহকুমা গঠনের সময়ে প্রশাসনিক কাজের জায়গা ছিল ইছামতী নদীর তীরে বর্তমানে সোলাদানার বাগুন্ডি গ্রাম।
ওই বাগুন্ডিকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি লবণ ব্যবসার কেন্দ্র হিসাবে বেছে নিয়ে সেখানে ‘সল্ট সুপারিন্টেন্ডেন্ট’ অফিস করে। ইছামতীর লবণাক্ত জল থেকে নুন তৈরি হত। সে কারণে ইংরেজ আমলে বসিরহাটের বিভিন্ন গ্রামে ইছামতী নদীর ধারে নুনের গোলা তৈরি করা হয়। বসিরহাট শহরে ছিল নুনের বাণিজ্য কেন্দ্র।
১৮২২ সালে সেখানকার ‘নিমকি দেওয়ান’ বা সেরেস্তাদার হয়েছিলেন প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর। কলকাতার বরাহনগর ঘাট থেকে ইছামতী নদী পথে বাগুন্ডিতে আসতেন দ্বারকানাথ। টাকির জমিদার মুন্সি কালীনাথ রায়চৌধুরী আতিথ্যে তার থাকার ব্যবস্থা হত।
এখানকার ব্যবসার আরেক পণ্য ছিল নীল। ১৮১০ সালে নীল চাষ শুরু হয় বসিরহাটে। ইছামতীর দু’ধার ঘেঁসে গড়ে ওঠে নীলকুঠি। বসিরহাটকে কেন্দ্র করে নুন ও নীল চাষের ব্যবসা চালায় ব্রিটিশরা। ১৮৪০ সালে ইছামতি নদীর ধারে হাট এবং আরও ৬০ বছর পরে ১৯০০ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় বসিরহাটের পুরাতন বাজার। বসিরহাটের নতুন বাজার স্থাপিত হয় ১৯২২ সালে।
ইচ্ছামতি নদী ছিল যোগাযোগের মাধ্যম। নদীপথে মালপত্র নিয়ে এসে বিক্রি করা হত হাটে। ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুসারে বসিরহাট শহরের জনসংখ্যা হল ১১৩,১২০ জন।[৩] এর মধ্যে পুরুষ ৫১% এবং নারী ৪৯%। এখানে সাক্ষরতার হার ৭৪%। পুরুষদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৭৯% এবং নারীদের মধ্যে এই হার ৬৯%। সারা ভারতের সাক্ষরতার হার ৭৭% তার চাইতে বসিরহাট এর সাক্ষরতার হার একটু বেশি।
এই শহরের জনসংখ্যার ১০% হল ৬ বছর বা তার কম বয়সী। উত্তর ২৪ পরগণা জেলার একটি মহকুমা বা উপবিভাগ। এটি তিনটি পৌরসভা (বসিরহাট, বাদুড়িয়া ও টাকি) এবং দশটি সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে গঠিত। দশটি ব্লকের একটি জনসংখ্যা শহর বা সেন্সাস টাউন এবং ৯০ গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। মহকুমার সদর দপ্তরটি বসিরহাট শহরে অবস্থিত।