Bardhaman গ্রামের ভিতরে দোতলা বাড়ি। বাড়ির মালিকের জমি রয়েছে। শাসক দলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বেশ ‘ঘনিষ্ঠ’। কয়েক দিন আগে সমীক্ষকের দল গ্রামে এলে স্থানীয়েরা জানতে পারেন, ওই বাড়ির কর্ত্রী ফাঁকা জায়গা দেখিয়ে দাবি করেছেন, তিনি ওই পাকা বাড়িতে ‘আশ্রয়’ নিয়ে রয়েছেন। ফাঁকা জমিতে বাড়ি তৈরির জন্য তাঁকে অনুদান দেওয়া হোক।
ঘটনাটি Bardhaman মেমারি ২ ব্লকের বোহার গ্রামের। এটিই একমাত্র ঘটনা নয়। অভিযোগ, ওই গ্রামের একাধিক পাকা বাড়ির মালিকের নাম রয়েছে আবাস-তালিকায়। তা প্রকাশ্যে আসতেই স্থানীয়েরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ২০২২-এ অগ্রাধিকার তালিকা তৈরির সময় থেকেই তাতে ‘পাকা বাড়ির’ মালিকদের নাম রয়েছে। অথচ মাটির বাড়িতে বসবাসকারীদের নাম নানা অজুহাতে বাদ দেওয়া হয়েছিল।
সে কারণে বোহার হাটতলায় এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে আটকে রেখে কয়েক জন মহিলা বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতির সামাল দেয়। ওই গ্রামের বাসিন্দারা গত ৬ নভেম্বর বর্ধমান ২-এর বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, গরিব অথচ প্রকৃত প্রাপকদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অথচ যাঁদের তালিকায় নাম থাকা অনুচিত, সে সব ধনী ব্যক্তিদের নাম তালিকায় রয়ে গিয়েছে।
একই অভিযোগ রয়েছে মেমারি ১ ব্লকের মণ্ডলজোনা, উত্তর কৈলাশপুর, কেন্না, মহেশডাঙা, পাঁচকে, চিলেডাঙা গ্রামেও। অনেকের নাম তালিকায় রয়েছে, যাঁদের পাকা বাড়ির সঙ্গে ধান কাটার যন্ত্রও রয়েছে। ব্লকের এক পঞ্চায়েত সদস্য স্থানীয় একটি সংস্থায় মোটা বেতনের চাকরি করেন। তাঁর গাড়ি আছে। কিন্তু ঘর পাওয়ার ‘লোভে’ কর্কেটের ছাউনির ঘরে তিনি বাস করছেন বলে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেছেন কয়েক জন। তাঁরা জানিয়েছেন, সরকারি প্রকল্পে আগে তিনি ঘরের টাকা পেয়েছেন।
কিন্তু বাড়ি না করে ফের টাকা আদায়ের ফন্দিফিকির করছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দরিদ্রের ‘ছদ্মবেশে’ সরকারি টাকা নিতে চাওয়া লোকজন আদতে Trinamool তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। অনেকেই গ্রামের তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতার আত্মীয়। আবার অনেকেই পঞ্চায়েতের সঙ্গে যুক্ত। সমীক্ষকেরা গ্রামে যেতেই তৃণমূলের একটা অংশ মুখ খুলছেন।
তাঁরা ঠিক তালিকা প্রকাশের জন্য প্রশাসনের উপরে ‘চাপ’ তৈরি করছেন। তবে বেশির ভাগ গ্রামের লোকজনই মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন না। জেলা প্রশাসনের দাবি, Bardhaman মেমারি ১ ব্লকে ১০,৫৩১ জনের নাম রয়েছে আবাস তালিকায়। তাঁদের মধ্যে ৮৭% ‘যোগ্য’ বলে বিবেচিত হয়েছেন। মেমারি ২ ব্লকে ৫,১৫৩ জনের মধ্যে ৮০ শতাংশের নাম ‘যোগ্যদের’ তালিকায় উঠেছে। দু’টি ব্লকের ক্ষেত্রেই ৭% আবেদনকারী সম্পর্কে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি প্রশাসন।
মেমারির তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, “প্রশাসন তালিকা তৈরি করছে। আমরা কোথাও এ নিয়ে কোনও দাবি বা অভিযোগ করিনি। দল চায়, সরকার নির্দেশিত মানদণ্ড মেনেই যেন অনুদান পান যোগ্য বাসিন্দারা। মুখ্যমন্ত্রীও সে রকম নির্দেশ দিয়েছেন।” ব্লক প্রশাসনের কর্তাদেরও দাবি, “বিভিন্ন স্তরে যাচাই করা হচ্ছে। ফাঁক গলেও অযোগ্যদের নাম তালিকাতে থাকার সুযোগ নেই।”