Mahabharataমহাভারতের অজানা চরিত্র Ahilyabati আহিল্যাবতী সম্পর্কে নানা অজানা তথ্য! মহাভারত (সংস্কৃত: महाभारतम्) হলো সংস্কৃত ভাষায় রচিত প্রাচীন ভারতের দুটি প্রধান মহাকাব্যের অন্যতম । মহাভারতের বিশালতা তথা দার্শনিক গূঢ়তা কেবল ভারতের পৌরাণিক আখ্যানই নয়, বরং এটিকে সমগ্র হিন্দু ধর্ম এবং বৈদিক দর্শন ও সাহিত্যের সারসংক্ষেপ বলা যেতে পারে। ‘মহাভারত’ নামটির উৎপত্তি প্রসঙ্গে একটি আখ্যান প্রচলিত যে, দেবতারা তুলাযন্ত্রের একদিকে চারটি বেদ রাখেন ও অন্যদিকে বৈশম্পায়ন প্রচারিত ভারত গ্রন্থটি রাখলে দেখা যায় ভারত গ্রন্থটির ভার চারটি বেদের চেয়েও অনেক বেশি।
সেই কারণে ভারত গ্রন্থের বিশালতা দেখে দেবগণ ও ঋষিগণ এর নামকরণ করলেন ‘মহাভারত’। আবার একে ‘পঞ্চম বেদ’ও বলা হয়। জগতের তাবৎ শ্রেষ্ঠ বস্তুর সঙ্গে একে তুলনা করে বলা হয়েছে: “মহত্ত্বাদ্ ভারতবত্ত্বাচ্চ মহাভারতমুচ্যতে।” অহিলাবতী বা মৌরবী ছিলেন দানব নরকাসুরের সেনাপতি মুরার কন্যা। ভগবান কৃষ্ণ তার স্ত্রী সত্যভামা সহ নরকাসুরকে পরাজিত করার জন্য রওনা হন। প্রথমে মৌরবী সত্যভামার সাথে যুদ্ধ করেন। কৃষ্ণ নরকাসুরকে হত্যা করার পর মৌরবীর পিতা মুরাকে হত্যা করেন। মৌরবী তার বাবার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যাইহোক, কৃষ্ণের দেবত্ব উপলব্ধি করার পরে, তিনি আত্মসমর্পণ করেছিলেন। কৃষ্ণ তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে সান্ত্বনা দেন যে শীঘ্রই তিনি বিয়ে করবেন। অহিলাবতী ছিলেন একজন নাগা কন্যা[1] (সর্প-কুমারী)। তিনি ছিলেন দেবতা শিবের পবিত্র সর্প বাসুকির কন্যা। কাহিনী অনুসারে, শিবের স্ত্রী পার্বতী শিবকে বাসি ফুল দেওয়ার জন্য অহিলাবতীকে অভিশাপ দিয়েছিলেন।
মহাভারতের নারী চরিত্রের কথা মনে এলেই প্রথমেই চোখে ভেসে ওঠে দ্রোপদীর নাম। দ্রোপদী নিঃসন্দেহে এই মহাকাব্যের প্রধান নারী চরিত্র।তবে দ্রোপদী ছাড়াও মহাভারতে আরো এমন অনেক নারী চরিত্র রয়েছে, যা বেশ গুরুত্বপূর্ণ হলেও মহাকাব্যে তারা এক প্রকার উপেক্ষিতা হয়েই থেকে গিয়েছেন। মহাভারতের এমনই এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র আহিল্যাবতী। পঞ্চপাণ্ডবের অন্যতম ভীম একবার রক্ষা পেয়েছিলেন এই নাগকন্যার জন্য।সর্পরাজ বাসুকীর ঔরসজাত কন্যা Ahilyabati আহিল্যাবতী। তিনি ছিলেন অত্যন্ত সুন্দরী, বুদ্ধিমতী ও প্রতিভাবান। নিজ পুত্রকে তিনি নিজ হাতে অস্ত্রবিদ্যা শিখিয়েছিলেন। মহাদেব শিবের পুষ্পকানন থেকে ফুল চুরির অপরাধে দেবী পার্বতী, Ahilyabati আহিল্যাবতীকে মানবী জন্মের অভিশাপ দেন।
তবে এই গল্পের শুরু আরো অনেক আগে। তখন পঞ্চপাণ্ডব ছোট। শকুনির কু মন্ত্রনায় ভীমকে খাবারের সাথে বিষ মিশিয়ে খাওয়ান দুর্যোধন। অতঃপর ভীমকে নদীর জলে ফেলে দেন। বিষক্রিয়ায় অচেতন ভীম এসে পৌছান নাগরাজ্যে। সেখানে আহিল্যাবতী ভীমকে দেখেই পঞ্চপাণ্ডব হিসেবে চিনতে পারেন।বিষক্রিয়ায় ততোক্ষণে মৃত্যুবরণ করেছেন ভীম। আহিল্যাবতীর অনুরোধে তার পিতা বাসুকী মহাদেবের দেয়া বর ব্যবহার করে ভীমের প্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।পরবর্তীকালে মানবীজন্ম নিয়ে ভীমের পুত্র ঘটোত্কচের সঙ্গে বিয়ে হয় আহিল্যাবতীর।ঘটোত্কচ ও আহিল্যাবতী দম্পতির পুত্র বারবারিক। আহিল্যাবতী নিজেই পুত্রকে যুদ্ধবিদ্যা শেখান। বারবারিকের নৈপুণ্যে খুশি হয়ে মহাদেব তাঁকে তিনটি অসাধারণ তীর উপহার দেন এবং অগ্নিদেব উপহার দেন একটি ধনুক। মহাভারতের যুদ্ধে পাণ্ডবদের পক্ষে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন বারবারিক।