Durga Puja প্রকৃতি সমৃদ্ধ রাজ্য Jharkhand ঝাড়খণ্ড। অরণ্য, আরণ্যক, পাহাড়, ঝরনা নিয়ে Jharkhand ঝাড়খণ্ড । অবসরযাপন কিংবা অ্যাডভেঞ্চারের ক্ষেত্রে এ রাজ্যের জুড়ি মেলা ভার। আদিবাসী সম্প্রদায়ের আধিক্য থাকায় দেশের আর পাঁচটা রাজ্যের সঙ্গে এ রাজ্যের সামান্য পার্থক্য রয়েই গেছে। বাঙালির কাছে ঝাড়খণ্ড মানেই রাঁচি, দেওঘর, ঘাটশিলা, ধলভূমগড় কিংবা নেতারহাট ভ্রমণ। সেসব তো আছেই। কিন্তু এ ছাড়াও এখানে রয়েছে আরেকটি আকর্ষণীয় বিষয়।
আর বলা বাহুল্য তার আকর্ষণ বাঙালির কাছে বেড়ানোর থেকে কম কিছু নয়। বাঙালির দুর্গাপুজো মূলত পাঁচ দিনের। অবাঙালিদের নবরাত্রি হয় ৯ দিন ধরে। আর ঝাড়খণ্ডের দেবী পীঠে দুর্গাপুজো Durga Puja চলে টানা ১৬ দিন ধরে। তাহলেই বুঝতে পারছেন!অরণ্য, আরণ্যক, পাহাড়, ঝরনা নিয়ে ঝাড়খণ্ড একটি প্রকৃতি সমৃদ্ধ রাজ্য। অবসরযাপন কিংবা অ্যাডভেঞ্চারের ক্ষেত্রে এ রাজ্যের জুড়ি মেলা ভার।
আদিবাসী সম্প্রদায়ের আধিক্য থাকায় দেশের আর পাঁচটা রাজ্যের সঙ্গে এ রাজ্যের সামান্য পার্থক্য রয়েই গেছে। বাঙালির কাছে Jharkhand ঝাড়খণ্ড মানেই রাঁচি, দেওঘর, ঘাটশিলা, ধলভূমগড় কিংবা নেতারহাট ভ্রমণ। সেসব তো আছেই। কিন্তু এ ছাড়াও এখানে রয়েছে আরেকটি আকর্ষণীয় বিষয়। আর বলা বাহুল্য তার আকর্ষণ বাঙালির কাছে বেড়ানোর থেকে কম কিছু নয়। বাঙালির দুর্গাপুজো মূলত পাঁচ দিনের। অবাঙালিদের নবরাত্রি হয় ৯ দিন ধরে। আর ঝাড়খণ্ডের দেবী পীঠে দুর্গাপুজো চলে টানা ১৬ দিন ধরে। তাহলেই বুঝতে পারছেন!
Jharkhand ঝাড়খণ্ডের লাতেহার জেলার চাঁদোয়ার উগ্রতারা মন্দিরে দুর্গাপুজো শুরু হয় আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষ নবমী থেকে। এই নিয়মের পিছনে যুক্ত রয়েছে রামের লঙ্কা জয়ের কাহিনি। বিশ্বাস অনুযায়ী, লঙ্কা জয়ের জন্য শ্রী রামচন্দ্র বোধন কলস স্থাপন করে ১৬ দিন ধরে মা দুর্গার পুজো করেছিলেন। সেই রীতি মেনেই Jharkhand ঝাড়খণ্ডের রাজবাড়ি এবং প্রাচীন মন্দিরগুলিতে এতদিন ধরে পুজো করা হয়। আর এই প্রথা চলছে প্রায় পাঁচশো বছর ধরে। লাতেহারের চাঁদোয়াতে অবস্থিত মা উগ্রতারা নগর মন্দিরটি একটি সিদ্ধ শক্তিপীঠ। প্রাচীন মন্দিরের বয়স হাজার বছরেরও বেশি। শারদীয়া নবরাত্রিতে এখানে ১৬ দিনের আচার পালিত হয়। অবশ্য মল মাস পড়লে পুজোর দিনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫। দেবী এখানে অষ্টভুজা।
টোরির উগ্রতারা ছিন্নমস্তা মন্দির বা উগ্রতারা নগর ভগবতীর বর্তমান মন্দিরের বয়স প্রায় ৪০০ বছর। ষষ্ঠদশ শতাব্দীতে মন্দির নির্মাণ করেন টোরির রাজা। মন্দিরে পুজো দিতে আসতেন স্বয়ং রানি অহল্যা বাই। মন্দিরে পুজো দিতে হাজির হন পশ্চিমবঙ্গ সহ প্রতিবেশী রাজ্য বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা এবং ছত্তিশগড়ের ভক্তরা। মন্দিরে Durga Puja দুর্গাপুজো হয় প্রায় ৫০০ বছর আগে হাতে লেখা পুঁথির নিয়ম অনুসারে। দীর্ঘদিন ধরে এই পুঁথি সযত্নে সংরক্ষণ করা হয়ে আসছে।
১৬ দিন পুজোর পর বিজয়া দশমীতে মা ভগবতীকে পান নিবেদন করা হয়। ভক্তদের বিশ্বাস সেই পান যখন নিজে থেকেই মাটিতে পড়ে যায় তখনই দেবী বিসর্জনের অনুমতি দেন। এই সময় প্রতি দুই মিনিট অন্তর চলে দেবীর আরতি। কখনও কখনও সারা রাত ধরেও পান না পড়লে আরতির চক্র অবিরাম চলতে থাকে। মূলত মিছরি এবং নারকেল দিয়ে মায়ের পুজো দেওয়া হয়। তবে পশুবলি দেওয়ার প্রথাও আছে এখানে।
এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে টোরি রাজ পরিবারের পুরনো কাহিনি। কথিত আছে, লাতেহারের মানকেরি বনে গিয়েছিলেন টোডার তৎকালীন রাজা। বনের মধ্যে টোডা পুকুরে জল পান করতে গিয়ে তাঁর হাতে ভেসে আসে দেবীর কয়েকটি মূর্তি। বুঝতে না পেরে রাজা মূর্তিগুলি ফের পুকুরে ভাসিয়ে দেন। তখন মা ভগবতী রাজার স্বপ্নে আসেন এবং তাঁকে মূর্তিগুলিকে প্রাসাদে নিয়ে যেতে নির্দেশ দেন। রাজা সেই মূর্তি নিয়ে এসে রাজপ্রাসাদের উঠোনে মন্দির নির্মাণ করে সেগুলি স্থাপন করেন।
অবশ্য লাতেহার জেলার চাঁদোয়ার উগ্রতারা মন্দির ছাড়াও বোকারো জেলার কোলবেন্দি মন্দির, চাইবাসার কেরা মন্দির এবং সেরাকেলা-খারসাওয়ানের রাজাগড়ের মা পৌরি মন্দিরেও ১৬ দিনের দুর্গা পুজো হয়। বোকারোর কোলবেন্দি মন্দিরে ১৬ দিনের দুর্গাপুজোর আচার চলে আসছে প্রায় সাড়ে তিনশো বছরেরও বেশি সময় ধরে। এই মন্দির নির্মাণ করেন তৎকালীন জমিদার ঠাকুর কিষাণ দেব। তাঁর বংশধরেরা আজও সেই ঐতিহ্য বহন করে চলেছেন। সেরাইকেলা রাজপরিবারে ১৬ দিনের দুর্গাপুজো শুরু হয় ১৬২০ সালে। নিজেদের প্রাসাদ চত্বরে এই পুজো শুরু করেন এই রাজবংশের রাজা বিক্রম সিং দেব। নবমীতে এখানে নুয়াখাই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। নুয়াখাই হল এখানকার নবান্ন উৎসব। পশ্চিম সিংভূম জেলার চক্রধরপুরের ৪০০ বছরের পুরনো মা ভগবতীর কেরা দেবী মন্দিরে ১৬ দিনের নবরাত্রি অনুষ্ঠানে হাজির থাকেন ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের অগণিত ভক্ত।
টোরি থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। অনেকেই রাঁচি থেকে টোরি হয়ে উগ্রতারা মন্দিরে পৌঁছন। রাঁচি থেকে টোরির দূরত্ব প্রায় ৮৫ কিলোমিটার। বেতলা অরণ্য থেকে উগ্রতারা মন্দির পৌঁছতে প্রায় তিন-চার ঘণ্টা সময় লাগে। লাতেহার শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে উগ্রতারা মন্দিরের দূরত্ব প্রায় ৩৮ কিলোমিটার।