কামদা একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য Kamada Ekadashi bengali চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের ‘কামদা’ একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য বরাহপুরাণে বর্ণিত হয়েছে। মহারাজ যুধিষ্ঠির বললেন- হে বাসুদেব! আপনি কৃপা করে আমার কাছে চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীর মহিমা কীর্তন করুন। শ্রীকৃষ্ণ বললেন- হে মাহারাজ! এই একাদশী ব্রত সম্পর্কে এক বিচিত্র কাহিনী বর্ণনা করছি। আপনি একমনে তা শ্রবণ করুন। পূর্বে মহর্ষি বশিষ্ঠ মহারাজ দিলীপের কৌতুহল নিবারণের জন্য এই ব্রতকথা কীর্তন করেছিলেন।
ঋষি বশিষ্ঠ বললেন- হে মহারাজ! চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের Kamada Ekadashi একাদশীর নাম ‘কামদা’। এই তিথি পাপনাশক ও পুণ্যদায়িনী। পূর্বকালে মনোরম নাগপুরে স্বর্ণনির্মিত গৃহে বিষধর নাগেরা বাস করত। তাদের রাজা ছিলেন পুন্ডরীক। চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের ‘কামদা’ একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য বরাহপুরাণে বর্ণিত হয়েছে। মহারাজ যুধিষ্ঠির বললেন- হে বাসুদেব! আপনি কৃপা করে আমার কাছে চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীর মহিমা কীর্তন করুন।
শ্রীকৃষ্ণ বললেন- হে মাহারাজ! এই একাদশী ব্রত সম্পর্কে এক বিচিত্র কাহিনী বর্ণনা করছি। আপনি একমনে তা শ্রবণ করুন। পূর্বে মহর্ষি বশিষ্ঠ মহারাজ দিলীপের কৌতুহল নিবারণের জন্য এই ব্রতকথা কীর্তন করেছিলেন। ঋষি বশিষ্ঠ বললেন- হে মহারাজ! চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীর নাম ‘কামদা’। এই তিথি পাপনাশক ও পুণ্যদায়িনী। পূর্বকালে মনোরম নাগপুরে স্বর্ণনির্মিত গৃহে বিষধর নাগেরা বাস করত। তাদের রাজা ছিলেন পুন্ডরীক। ললিতের এরকম ভয়ঙ্কর রাক্ষস শরীর দেখে ললিতা মহাদুঃখে চিন্তায় ব্যাকুল হলেন। স্বেচ্ছাচারী রাক্ষস ললিত দুর্গম বনে ভ্রমণ করতে লাগল। ললিতা কিন্তু তার সঙ্গ ত্যাগ করল না।
ললিত নির্দয়ভাবে মানুষ ভক্ষণ করত। এই পাপের ফলে তার মনে বিন্দুমাত্র শান্তি ছিল না। পতির সেই দুরাবস্থা দেখে ব্যথিত চিত্তে রোদন করতে করতে ললিতা গভীর বনে প্রবেশ করল। একদিন ললিতা বিন্ধ্যপর্বতে উপস্থিত হল। সেখানে ঋষ্যশৃঙ্গ মুনির আশ্রম দর্শন করে মুনির কাছে হাজির হল। তার চরণে প্রণাম করে সেখানে দাঁড়িয়ে রইল। মুনিবর জিজ্ঞাসা করলেন- হে সুনদরী! তুমি কে, কার কন্যা, কি কারণেই বা এই গভীর বনে এসেছ? তা সত্য করে বল। তদুত্তরে ললিতা বলল- হে প্রভু! আমি বীরধন্যা গন্ধর্বের কন্যা। আমার নাম ললিতা। আমার পতির পিশাচত্ব দূর হয় এমন কোন উপায় জানবার জন্য এখানে এসেছি।
তখন ঋষি বললেন- চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের কামদা নামে যে একাদশী আছে, তুমি সেই ব্রত যথাবিধি পালন কর। এই ব্রতের পূণ্যফল তোমার স্বামীকে অর্পণ করলে তৎক্ষণাৎ তার সমস্ত পাপ বিনষ্ট হবে। বশিষ্ঠ ঋষি বললেন-হে মহারাজ দিলীপ! মুনির কথা শুনে ললিতা আনন্দ সহকারে কামদা একাদশী পালন করল। তারপর ব্রাহ্মণ ও বাসুদেবের সামনে পতির উদ্ধারের জন্য- ‘আমি যে কামদা একাদশীর ব্রত পালন করেছি, তার সমস্ত ফল আমার পতির উদ্দেশ্যে অর্পণ করলাম।
এই পুণ্যের প্রভাবে তাঁর পিশাচত্ব দূর হোক।’ এই কথা উচ্চারণ মাত্রই ললিত শাপ মুক্ত হয়ে দিব্য দেহ প্রাপ্ত হল। পুনরায় গন্ধর্ব দেহ লাভ করে ললিতার সাথে সে মিলিত হল। তারা বিমানে করে গন্ধর্বলোকে গমন করল। হে মহারাজ দিলীপ এই ব্রত যত্নসহকারে সকলেরই পালন করা কর্তব্য। এই ব্রত ব্রহ্মহত্যা পাপবিনাশক এবং পিশাচত্ব মোচনকারী। এই ব্রত কথা শ্রদ্ধাপূর্বক পাঠ ও শ্রবণে বাজপেয় যজ্ঞের ফল লাভ হয়।
প্রশ্ন উত্তর পর্ব
কামদা একাদশীতে কি করতে হয়? Kamada Ekadashi কামদা একাদশীর সকালে স্নান করার পর ভক্ত উপবাস করেন। প্রায়ই কাছাকাছি মন্দিরে কৃষ্ণের রূপে বিষ্ণুকে পূজা দেওয়া হয় ।
কামদা একাদশীর পারন কখন? Kamada Ekadashi এপ্রিল কামদা একাদশী ব্রত পালিত হবে। হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী চৈত্র মাসের শুক্ল পক্ষের একাদশী তিথিতে এটি পালিত হয়। এর প্রভাবে ব্যক্তির সমস্ত মনস্কামনা পূরণ হয়।
একাদশী মাহাত্ম্য কি? একাদশী পুণ্যতিথি হিসেবে বিবেচিত। তামিল হিন্দু পঞ্জিকায় একাদশীর গণনা। হিন্দুধর্মের, একাদশীর উপবাসের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল মন ও শারীরিক ইন্দ্রিয়গুলির উপর নিয়ন্ত্রণ লাভ করা এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির দিকে পরিচালিত করা। এছাড়াও, উপবাসের সাথে যুক্ত বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।
একাদশীতে কি করা উচিত নয়? Ekadashi – খাদ্যশস্য, শস্য এবং মটরশুটি (ডাল) এড়িয়ে চলতে হবে । রান্নার জন্য মশলা ব্যবহার করা গেলেও সরিষার বীজ এড়ানো উচিত। আপনি গুঁড়ো হিং (হিং) ব্যবহার করতে পারবেন না, কারণ এতে সাধারণত দানা থাকে। যতদূর তিল বীজ সংশ্লিষ্ট, তারা শুধুমাত্র শনি-তিলা একাদশীতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
কামদা একাদশী কেন পালন করা হয়? Kamada Ekadashi এটা বিশ্বাস করা হয় যে কামদা একাদশীর ব্রত একজনকে তাদের পুণ্য ফিরে পেতে এবং উন্নত করতে সাহায্য করে । অধিকন্তু, এটি ভক্তদের এবং তাদের পরিবারকে সমস্ত অভিশাপ থেকে রক্ষা করে। ব্রাহ্মণ হত্যা সহ সমস্ত পাপ ক্ষমা করা যায়, যদি ভক্ত এই দিনে উপবাস করেন।
একাদশী কিভাবে পালন করা হয়? একাদশীতে অন্ন ভোজন করলে যেমন নিজে নরকবাসী হবে অন্যকে ভোজন করালেও নরকবাসী হবে। কাজেই একাদশী পালন করা আমাদের প্রত্যেকের কর্তব্য। একাদশী ব্রত পালনের প্রকৃত উদ্দেশ্য কেবল উপবাস করা নয়, নিরন্তর শ্রীভগবানের স্মরণ, মনন ও শ্রবন কীর্ত্তনের মাধ্যমে একাদশীর দিন অতিবাহিত করতে হয়।
একাদশী কাদের করা উচিত? একাদশী হিন্দু ধর্মে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন, বিশেষ করে বৈষ্ণবদের জন্য যারা ভক্তি সহকারে ভগবান বিষ্ণুর উপাসনা করেন। একাদশী উপবাস পালন এবং এই দিনে পূজা করলে আশীর্বাদ ও সমৃদ্ধি আসে।
একাদশীতে মেয়ে হলে কি হয়? একাদশীতে জন্মগ্রহণকারী মেয়ে: হিন্দু ধর্মে হরেক মাস ভ্রত-ত্যোহার আতে থাকে কিছু বর্ততে একটি নির্দিষ্ট তারিখে রাখা হয়। उन से प्रदोष और एकादशी কার ব্রত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। হিন্দু পঞ্চাং অনুসারে হার তিথির বিশেষ গুরুত্ব ছিল এবং এটি কোন দেবী-দেবতা বিশেষ ছিল।
একাদশীতে কি ভাত খাওয়া উচিত নয়? একাদশীর উপবাসের একটি নিয়ম হল একাদশীতে ভাত খাওয়া নিষিদ্ধ । এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এই দিনে ভাত খেলে পরের জন্মে মানুষ সরীসৃপের রূপ ধারণ করবে।
একাদশীতে কি সুজি খাওয়া যায়? এই সময় সাধারণত ফলমূল ও বিভিন্ন সবজি এবং দুধ খাওয়া যায়। তবে একাদশীতে পঞ্চরবি শস্য বর্জন করা বাঞ্ছনীয়। ২। গম জাতীয় সকল প্রকার খাদ্য যেমন আটা, ময়দা, সুজি, বেকারির রুটি, সব রকম বিস্কুট, হরলিকস ইত্যাদি।
একাদশীতে শেভ করা উচিত নয় কেন? শেভ করার পাশাপাশি এই দিনে নখ বা চুল কাটা থেকে বিরত থাকা উচিত কারণ এটি দুর্ভাগ্য এবং দেবী লক্ষ্মীকে অসন্তুষ্ট করে বলে বিশ্বাস করা হয় । একাদশীর শুভ দিনগুলিতে, শ্রাদ্ধ পূজা এবং শ্মশানের মতো হিন্দু আচারগুলি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
একাদশী দেবী কে? Ekadashi: এই পবিত্র উপলক্ষটি দেবী একাদশীর জন্মকে চিহ্নিত করে, একটি স্বর্গীয় যা ভগবান বিষ্ণুর সারাংশ থেকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন , যিনি বীরত্বের সাথে মুর রাক্ষসকে পরাজিত করেছিলেন। নিছক পালনের বাইরে, উৎপান্ন একাদশী একটি গভীর আধ্যাত্মিক যাত্রার ইঙ্গিত দেয়, যা অশুভতার উপর ধার্মিকতার বিজয়ের প্রতীক।
একাদশীতে কেউ মারা গেলে কি হয়? হিন্দু বিশ্বাস অনুসারে, তাদের মৃত্যুশয্যায় থাকা ব্যক্তিরা নিজেদেরকে ভাগ্যবান বলে গণ্য করতে পারে যদি তারা একাদশীতে মারা যায় – হিন্দু পঞ্জিকাগুলির চান্দ্র মাসের 11 তম চান্দ্র দিনে। বিশ্বাস এই যে এই ধরনের ব্যক্তিরা ঈশ্বরের সাথে অবিলম্বে মিলিত হয়ে মোক্ষ লাভ করে।
কোন একাদশী উপবাস করা ভালো? নির্জলা : ভক্তরা একাদশীর দিনে জল ছাড়া সম্পূর্ণ উপবাস পালন করে। জলহর: এই ধরনের একাদশী উপবাসে ভক্তরা শুধু জল খান। ক্ষীরভোজী: এই ধরনের একাদশীর উপবাসে ভক্তরা দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য গ্রহণ করেন।
একাদশী করলে কি লাভ হয়? শাস্ত্রে বলেছেন একাদশী ব্রত পালন করলে একাদশ ইন্দ্রিয় বশীভূত হয়। এই একাদশ ইন্দ্রিয় হল পঞ্চ কর্মেন্দ্রিয়, পঞ্চ জ্ঞানেন্দ্রিয় ও মন। সাধারণত নূতন উপনয়নের পর একবছর ব্রাহ্মণেরা, বিধবারা এবং সন্ন্যাসীরা ও দীক্ষাপ্রাপ্তরা কেউ কেউ একাদশী ব্রত পালন করেন। এটি সামর্থ্য অনুযায়ী বিভিন্নভাবে পালন করার বিধান আছে।
একাদশীর দিন কি সহবাস করা যায়? একাদশী ব্রত পালনের প্রকৃত উদ্দেশ্য কেবল উপবাস করা নয়, নিরন্তর শ্রীভগবানের নাম স্মরণ, মনন, ও শ্রবণ কীর্তনের মাধ্যমে একাদশীর দিন অতিবাহিত করতে হয়। একাদশী পালনে পরনিন্দা, পরচর্চা, মিথ্যা ভাষণ, ক্রোধ দূরাচারী, সহবাস সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। একাদশী ব্রতের আগের দিন রাত ১২টার আগেই অন্ন ভোজন সম্পন্ন করে নিলে সবচেয়ে ভাল।